গোটা বছরের একমাত্র সম্বল এভাবে নদীতে বিলীন হওয়ায় শোকস্তব্ধ হাওরের কৃষককূল। অকালে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় তাদের মানসিক শান্তিও যেন উড়ে গেছে।
নদীর পানি আর চোখের পানি মিলেমিশে হয়েছে একাকার। চোখের সামনে নদীর পানিতে হাওর তলিয়ে যাওয়ার দিশেহারা নিরুপায় অনেক কৃষক ফসল সংগ্রহের শেষ চেষ্টাটুকু করে যাচ্ছেন। তারা যেন শুরু করেছেন নতুন সংগ্রাম। তবুও বুঝি শেষ রক্ষা হবে না হাওরের কৃষকদের।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের চামড়াঘাট থেকে চংনোয়াগাঁও, সুতারপাড়া ঘুরে ইটনার শিমুলবাগ, বড়িবাড়ি, কাটাখাল, এলেংজুড়ি, চিলনিসহ বিস্তীর্ণ হাওরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেলো কৃষকদের সর্বশান্ত হবার দৃশ্য।
অবশ্য নদীর বুকে স্পিডবোটে করে হাওরের কৃষকদের কষ্টের দিনলিপি দেখতে গিয়ে মুখভার কৃষকদের এক চিলতে হাসিই চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
![ভারত থেকে আসা ঢলে তলিয়ে যাওয়া ফসল রক্ষার শেষ চেষ্টা করছেন হাওরের কৃষকরা; ছবি অনিক খান](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/kisor-bg20170419203448.jpg)
আলাপের সূত্রপাত হতেই তাদের হাহাকার আর চোখের পানি তখন গড়িয়ে পড়ছিল নদীর বুকে। তারা জানালেন, জ্যেষ্ঠ মাস পর্যন্ত ভারী বর্ষণ না হলেই মাঠের ফসল টিকে যেতো।
কিন্তু চৈত্র মাসের আগাম বন্যা কেড়ে নিয়েছে তাদের স্বপ্ন-সাধ। বাকি দিনগুলো কীভাবে পাড়ি দিবেন এ নিয়েই ভেবে চিন্তায় অস্থির তারা।
এইতো সেদিনও সোনালী ধানের ঢেউয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন যারা, সর্বনাশা বন্যায় তাদের পরিবারে চলছে আহাজারি।
নদীর বুকে চলতে চলতেই কাটাখালের পশ্চিম দিকের হাওরের ধান তলিয়ে যাবার দৃশ্য। একই অবস্থা এলেংজুড়ি, চিলনিসহ সব হাওরেই।
![ভারত থেকে আসা ঢলে তলিয়ে যাওয়া ফসল রক্ষার শেষ চেষ্টা করছেন হাওরের কৃষকরা; ছবি অনিক খান](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/kisor-bg.220170419203526.jpg)
গতবারের ধার-দেনা পরিশোধ করে এবার ২৫ একর জমিতে তিনি ফসল লাগিয়েছিলেন। জানালেন, অকাল বন্যায় তার ২৫ একর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
এ এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চাষির নাম মোক্তার হাজি। ধর্ণাঢ্য এ কৃষকের প্রায় ৪’শ একর ফসল অকাল ঢলে বিলীন হয়েছে। হাপিত্যেশ করে তিনি বলেন, হাওরের কৃষকদের এবার ভাতের কষ্টে মরতে হবে।
** শুন্য হাতে ফিরছেন ‘জিরাতিরা’
** হাওরে বিদ্যুৎ যায় না, আসে!
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এমএএএম/আরআই