শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বাতিঘরে জসীম উদ্দীনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এভাবেই কবিকে মূল্যায়নে করেন চিন্তাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। ‘বাংলা ও বাঙালির কবি’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্প-সাহিত্যের কাগজ ‘কালের ধ্বনি’।
জসীম উদ্দীনের কর্মযজ্ঞের কথা স্মরণ করে সলিমুল্লাহ খান বলেন, কবি জসীম উদ্দীন জীবনের প্রতিটা পর্যায়েই ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের স্টাইলে কবিতা রচনা করেছেন। সেসব কবিতা এখন বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেশের বাইরে অন্য ভাষাতেও অনুদিত হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তার লেখা, কমে যাচ্ছে তার পাঠ।
অনুষ্ঠানে জসীম উদ্দীনকে নিয়ে আরও আলোচনা করেন- জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক, সাহিত্যিক ও গবেষক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, সাংবাদিক কাজল রশীদ শাহীন ও প্রাবন্ধিক কুদরত-ই-হুদা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- কালের ধ্বনির সম্পাদক ইমরান মাহফুজ।
আলোচনায় ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, জাতীয় জাদুঘরের উদ্যোগে ফরিদপুরে কবির বসতভিটার পাশে তার নামে একটি জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্মরণের কাজ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আরো গবেষণার মাধ্যমে কবিকে আমরা আরো ভালোভাবে জানতে পারবো।
কাজল রশীদ শাহীন বলেন, পল্লীকবি জসীম উদ্দীনকে মূল্যায়নে এখনো সমস্যা ও সংকট রয়েছে। আমরা যতদিন না প্রকৃত বাঙালি হতে পারবো, ততদিন তার প্রকৃত মূল্যায়ন হবে না। এই কবিকে আমাদের বর্তমান প্রজন্মের যেভাবে চেনার কথা ছিল, সেভাবে চেনে না। অথচ তিনি তার কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে সোনালী আলো ফেলে রেখে গেছেন। তিনি আমাদের শেকড়ের সন্ধান দিয়েছেন।
প্রাবন্ধিক কুদরত-ই-হুদা বলেন, পল্লীকবি জসীম উদ্দীন মূলত গানের মানুষ ছিলেন। তিনি নিজেই বলে গেছেন, ‘আমি কবি নয়, কবিয়াল হতে চেয়েছিলাম’। তার কবিতা মূলত গান ছাড়া পড়া যায় না। বঙ্গবন্ধু একসময় তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিতে চেয়েছিলেন। এই কবিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে গেলে বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়নকেই যথার্থ বলতে হয়। বাংলা সাহিত্যে এ কবির অবদান অপরিসীম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে