মরহুমের বড়ভাই ইসমাইল মানিক বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৩মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পড়ুন>>প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব জয়নুল আর নেই
**জয়নুল আবেদীনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের জন্ম। পিতা মরহুম ইছহাক মিয়া ও মাতা মরহুমা মেহেরুন্নিছা।
লোহাগাড়ার চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদরাসায় পড়ালেখার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৭৫ সালে এসএসসি ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দুই বছর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৫-৯৬ সালে দায়িত্ব পালনকালে তার সাহসী নেতৃত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার কারণে অনেক জটিল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়। দেশের প্রতি নির্ভয় আত্নত্যাগ, পাহাড়সম মানসিক দৃঢ়তা ও দেশ সেবার মহান ব্রত বিবেচনায় তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
একজন চৌকস সেনা অফিসার হিসেবে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও কর্মদক্ষতার কারণে শান্তিরক্ষী মিশন থেকে ফিরে আসার পর তাকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে এসএসএফ এর মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। এপ্রিল মাসে মেজর জেনারেল পদে তিনি পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন।
মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন নিজ গ্রামে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন মেহেরুন্নিছা প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত চুনতির অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মরহুম বাবার নামে নির্মাণ করেন ইছহাক মিয়া সড়ক । উপজেলার দুর্গম রাস্তায় মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে তিনি কালভার্ট ও পাকা রাস্তা নির্মাণ করে দেন।
চুনতি মহিলা ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। প্রিয় গ্রামের প্রতি ভালোবাসার স্বীকৃতিস্বরূপ তার নামে পানত্রিশায় বীর বিক্রম জয়নুল আবেদীন উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
এসি/টিসি