ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনারগাঁওয়ে দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর লোকজ উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
সোনারগাঁওয়ে দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর লোকজ উৎসব মেলায় হাতি-ঘোড়া-পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে ছুটির দিনে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়।

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে লোক সমাগম। বিকেলের মধ্যে দেখা যায় মেলায় উপচেপড়া ভিড়।

শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, বিভিন্ন জেলা থেকেই দর্শনার্থীরা এসেছেন মেলায়।

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলা চলবে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।  

এবারের মেলার আকর্ষণ গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম ‘ভালবাসার তামা-কাঁসা-পিতল শিল্পের’ বিশেষ প্রদর্শনী। প্রদর্শনী উপলক্ষে গবেষণামূলক একটি ক্যাটালগ প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। এবারের মেলায় বাজেট ধরা হয়েছে ৭০ লাখ টাকা। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও মেলা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।  

এদিকে, মেলা উপলক্ষে চত্বর ও ফাউন্ডেশনের পুরো এলাকা বর্ণাঢ্যভাবে সাজানো হয়েছে।  

ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬০ জন কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশিপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি-ঘোড়া-পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, নকশি হাতপাখা, মুন্সিগঞ্জের শীতলপাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশশিল্প, মুন্সিগঞ্জের পটচিত্র, ঢাকার কাগজের হস্তশিল্পসহ মোট ১৭০টি স্টল রয়েছে।

এছাড়াও লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভাণ্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী রয়েছে।

সরেজমিনে দুপুরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মেলার বিভিন্ন স্টলে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের ভিড়। এছাড়া মেলায় মুড়ি ও মুরকির দোকান সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।  

মেলায় পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা সামসুল আরেফীন বলেন, দুপুরের দিকে মেলায় এসেছেন। মেলার পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর। এখানে ঘুরে ও কেনাকাটা করে মজা পাচ্ছি। বাচ্চারা নাগরদোলায় চড়েছে। সব মিলিয়ে ছুটির দিনটি এখানে কাটিয়ে ভালোই লাগছে।
 
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য। এবার মেলায় গত বছরগুলোর তুলনায় লোক সমাগম অনেক বেশি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।