গ্রামে শিশু-কিশোরদের এটাই টানাগাড়ি খেলা। যারা গ্রামে বড় হয়েছেন বা হচ্ছেন এমন খেলা খেলেনি বা দেখেননি, তেমন হয়তো পাওয়াই যাবে না।
দিন পাল্টেছে। জীবনযাত্রার মাত্রায় যোগ হয়েছে প্রযুক্তি। তেমনি বাড়ছে পরিবেশ বান্ধব দ্রব্যাটির ব্যবহারও। সবকিছুতেই পরিবেশের ছোঁয়া এখন ফ্যাশনেও পরিণত হয়েছে বটে। এসবের ধারাবাহিকতায় বাদ পড়েনি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে-সামগ্রীতে সেই সুপারির খোলের ব্যবহারও। রীতিমতো থালা-বাটি বানিয়ে তাক তাকিয়ে দিয়েছে। যেমন দেখতে নান্দনিক, তেমনি ব্যবহার বান্ধবও।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজত শিল্প মেলায় গিয়ে নতুন এ পণ্যের দেখা মিলেছে।
বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান তা বাজারজাত করছে। মেলায় কিংবা শো-রুম কোথায় এগুলো খুচরা বিক্রি হচ্ছে না। অন্তত একসেট নিতে হবে। যে দাম ধরা হয়েছে নান্দনিকতা কাছে তা কিছুইনা বলা চলে। প্রতিটি থালা ১০টাকা, বাটি আকার ভেদে ৬ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেপিসির সেলস এক্সিকিউটিভ বাংলানিউজকে জানান, ওয়ানটাইম হিসেবে এগুলো ব্যবহারের জন্য তৈরি করার হলেও, বারবার ব্যবহার করা যায়। যত্ন নিয়ে ব্যবহার করলে কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে। তবে রেগুলার নয়, গেস্টদের সামনে এই থালা-বাটিতে খাবার পরিবেশনে আনন্দের মাত্রাটাই বাড়িয়ে দেবে। শিল্পমেলায় ৩শ স্টল নিয়ে বসেছে সবাই তাদের নান্দনিক সব পণ্য নিয়ে। হ্যান্ডিক্রাফট, লেদারসহ অটোমোবাইল আর ইলেকট্রনিক পণ্যও রয়েছে। দু’দিন সময় বাড়ানোয় মেলার পর্দা নামবে ৮ এপ্রিল। খোর্শেদা খানম নামে এক গৃহিনীকে দেখা গেলো, সুপারি গাছের খোলের থালা-বাটি কিনতে। তিনি বললেন, মেহমানদারিতে এখন কেবল স্বাদটাই দেখা হয় না। পরিবেশনটা একটা বিষয়। তাই এগুলো নিলাম।
দর্শনার্থী ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু অভিযোগও শোনা গেলো। তারা বলছেন, শিল্পমেলা নিয়ে সঠিক প্রচারের অভাব রয়েছে। অনেকেই শিল্প বলতে ভারী যন্ত্রপাতির মেলা ভেবেছে। তাই লোক সমাগম শুক্রবারেও কম। ঘরোয়া বুটিকস’র কর্ণধার নাদিরা হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, কিছুদিন আগেই এসএমই মেলা হলো। আমাদের পণ্য একই। সে মেলার তুলনায় অর্ধেক ক্রেতা-দর্শনার্থী। গণমাধ্যমে প্রচারটাও আরো বাড়ানো উচিত ছিলো।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে লেদার ও হ্যান্ডিক্রাফটটের পণ্যই বেশি। আগতদের আগ্রহও এসব ঘিরেই। ক্ষুদ্র শিল্প যে কতটা এগিয়ে যাচ্ছে তা স্পষ্ট হয়েই ধরা পড়ছে সবার কাছে। বিভিন্ন সব ডিজাইন, নিপুণ কারিগরিতে তৈরি এসব পণ্য অনেকেই রফতানি করছেন রীতিমতো। বিশেষ করে লেদারের পণ্যগুলোর মান দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় যায়।
হাতের কাজের জামা, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শাড়ি, বেড-শিট কি নেই! সবই পাওয়া যাচ্ছে এতেবারে হাতের নাগালের দামে। লেদারের মানিব্যাগ, সাইড ব্যাগ, পার্স, লেডিস ব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, জুতো সেন্ডেল হাতে নিলে যে কেউই বিস্মিত হবে। দেশিয় তৈরি পণ্যের গুণগত মান যে কতটা উৎকর্ষ সাধন করেছে, সে ধারণাই বদলে যাবে। অনেকে সে কথা মুখে বলেও ফেলছেন।
দেশি পার্স যে এতো সুন্দর হতে পারে কিংবা ব্যাগ, সে কথাই বলছিলেন উত্তরার বাসিন্দা আতাউর রহমান। 'যা দেখছি, তাই কিনতে ইচ্ছে হচ্ছে। কোনোটা রেখে কোনোটা কিনবো, সে সিদ্ধান্ত নিতেই সমস্যা হচ্ছে। '
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
ইইউডি/এএটি