ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

অধিকাংশই খুশি, কেউ কেউ দ্বিধাদ্বন্দ্বে

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
অধিকাংশই খুশি, কেউ কেউ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ৭ সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে/ছবি: হারুণ-বাংলানিউজ

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া নিয়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই খুশি। সুযোগ-সুবিধা সর্ম্পকে ধারণা না থাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। শিক্ষার তবে অতো সব না ভেবে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সেশন জট কমানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার নিশ্চয়তা চান তারা।

ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেজাউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সনদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেবে। এতে পড়াশোনার মান আরও বাড়বে বরে মনে করি।

আমরা খুশি। নিশ্চয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সনদ আলাদাভাবে মূল্যায়নও করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হলে শিক্ষা ও সার্টিফিকেটের মান বাড়া, সনদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকা, সেশনজট ফিরে আসবে কিনা, বেতন, পরীক্ষার ফি বাড়বে কিনা, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কারা করবে, কারিকুলাম কীভাবে রচিত হবে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো সমাধান হবে কিনা? এরকম নানান প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পিযুষ কান্তি রায় বলেন, আমরা জানি না আমাদের সার্টিফিকেটে কি লেখা থাকবে? পড়াবেন তো এখনকার শিক্ষকরাই। তাহলে মান বাড়াতে কি উদ্যোগ নেওয়া হবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ৭ সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে/ছবি: হারুণ-বাংলানিউজপরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও কারিকুলাম বিষয়ে তিনি বলেন, ক্লাসে পড়াবেন এখানকার শিক্ষকরা, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করলে সেটা কীভাবে সমন্বয় করা হবে? বেতন বাড়নো হবে কিনা?

আগে থেকে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিজ্ঞতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সনদ সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে দেওয়া হয়। মান বাড়ানোর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে কারিকুলাম ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের মান বাড়তে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। অতিরিক্ত কোনো বেতন বা ফি নেওয়া হয় না। সনদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দিলেও প্রশংসাপত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দেওয়া হয় বলে আলাদাভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পরিচিতিও থাকবে।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপন খান বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিনে অনেকগুলো কলেজ ছিলো। পরবর্তীতে সেশনজট দেখা দেয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। যদিও পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও সেশন জট দেখা দেয়। এখন তো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট নেই। অনেকগুলো অধিভুক্ত করে আবারো সেই সেশনজট যেন ফিরে না আসে।

শিক্ষার্থী সাইফুল বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোর মধ্যে ঢাকা কলেজ এক নম্বর অবস্থানে ছিলো। সবাই আলাদা মূল্যায়ন করতো। এখন অন্য সাতটি কলেজের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হলেও ঢাকা কলেজকে যেন আলাদা মূল্যায়ন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ৭ সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে/ছবি: হারুণ-বাংলানিউজঢাকা কলেজের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য লাভজনক। এতে সনদ ও পড়াশোনার মান বাড়বে। তবে খরচ বাড়বে না।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উচ্চশিক্ষার মান বাড়াতে ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
 
অন্য কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। বর্তমানে এ ৭টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৩৬ জন শিক্ষার্থী এবং ১ হাজার ১৪৯ জন শিক্ষক রয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
এমইউএম/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।