মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা জেলার সাভার, ধামরাই, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, বেতন বৈষম্য কেন থাকবে? আপনাদের অনেক সমস্যা আছে আমি জানি।
তিনি বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি আপনাদের বদলি নিয়ে টিও অফিসে ঝুট-ঝামেলা হয়। অনেক দালাল-ফালাল আপনাদের পিছনে লাগানো আছে। আমি এগুলো টলারেট করব না। কোনো শিক্ষা কর্মকর্তা যদি আমার শিক্ষকদের হয়রানি করেন, আমি তাদের ‘মার্সি’ করব না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনাদের মাথা তারা যেন নষ্ট করতে না পারে। আমি দেখছি এই শিক্ষককে এখানে বদলি করে, ওখানে বদলি করে, এর ভিতর দিয়ে টাকা পয়সা নেওয়া হচ্ছে। আবার শিক্ষকদের ভিতরে কিছু শ্রেণি আছে, তারা আবার টিও সাহেবের বগলে সুন্দরভাবে বসে আরেক শিক্ষকের কিভাবে ক্ষতি করা যায়- করে না?
শিক্ষকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমি সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা না, আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত লোক, সরাসরি আমার সাথে টেলিফোনে কথা বলবেন। আমার দরজা সবার জন্য খোলা থাকবে। যেকোন সমস্যা নিয়ে, আমার বিরুদ্ধে হলেও আমাকে বলবেন।
শিক্ষকদের মা-বাবার ভূমিকায় আসার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা তাদের (শিক্ষার্থীদের) ভালোভাবে তৈরি করতে পারলে আগামী বাংলাদেশ ভালোভাবে তৈরি হবে।
বেতন বৈষম্য প্রসঙ্গে সচিব বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে কাজ করছি। একটা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থসচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের সাথে কথা বলেছি। তারা আমার সাথে একমত পোষণ করেছেন যে, বেতন বৈষম্য দূরীভূত হওয়া দরকার এবং আমরা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছি। এটা শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেব এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ সমস্যা সমাধান করা হবে।
সচিব আরো বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সহকারী শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষদের নিয়োগ নীতিমালা অনুমোদন করিয়েছি। এটা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের আছে, আজ-কালের মধ্যে পাওয়ার কথা। এটা পাওয়া গেলে যেসব প্রধান শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের সরকারি কর্মকমিশনের সুপারিশ নিয়ে দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হবে।
প্রাথমিকের শিক্ষককে অবসরকালীন অর্থ সুবিধার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, শিক্ষকদের রিটায়ারমেন্টের পরে তাদের পেনশন পেতে অনেক ঝামেলা হয়। ঘুষ প্রদান করতে হয়, এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সচিব বলেন, আপনারা প্রত্যেকটা শিক্ষকের আগামী দুই মাসের মধ্যে সার্ভিস বুক সংক্রান্ত ডাটাবেইজ তৈরি করবেন। কোন শিক্ষক কত তারিখে পিআরএলে যাবে সেটা তাকে এক মাস আগে জানিয়ে দিতে হবে এবং পিআরএল শুরু হওয়ার দুই মাসের মধ্যে সমস্ত আর্থিক সুবিধা নিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষক সমাজ যাতে কোনভাবে হয়রানির শিকার না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
এমআইএইচ/এমজেএফ