ঢাকা, রবিবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বসন্তের প্রথম দিনে ফেনী ইউনিভার্সিটিতে নবীনবরণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
বসন্তের প্রথম দিনে ফেনী ইউনিভার্সিটিতে নবীনবরণ

ফেনী: গাছে গাছে পলাশ-শিমুল ফুল। ডালে ডালে শালিকের কিচিরমিচির, সঙ্গে কোকিলে কুহুতান জানান দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে। পুব আকাশে রক্তিম সূর্য আরও একটি বসন্ত যোগ করেছে ধরণীতে। এমন রঙিন দিনেই নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিলো ফেনী ইউনিভার্সিটি।

বুধবারের (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ আয়োজনে যোগ দিতে বাসন্তী রঙের শাড়ি, জামা কিংবা পাঞ্জাবি পরে ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পিছিয়ে ছিলেন না শিক্ষক-কর্মকর্তারাও।

নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাজে ছিল ভিন্নতা। বাসন্তী রঙের শাড়ির সঙ্গে মিল রেখে কেউ মাথায় পরেছিলেন ফুলের মুকুট আবার কেউবা খোপায় গুঁজেছিলেন গাঁদা ফুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বসন্তের সাজ অনুষ্ঠানকে দেয় বাড়তি মাত্রা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬, ১৭, ১৮তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণের এ অনুষ্ঠানের শুরুটা হয় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেশার্স রিসিপশন-২০১৯ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সালমা আক্তার। অতিথি ও নবীনদের বরণ করে নেওয়ার পর ফেনী ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারার সুযোগ পাওয়া নিয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা জানান নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা। তুলে ধরেন এখানকার শিক্ষার মান ও সুযোগ-সুবিধার কথা।

এরপর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও যে জয়ী হওয়া যায়, সেই গল্প শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে কৃতিত্বে সঙ্গে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ফেনীর সন্তান ইসহাক শাহীন ভূইয়া। চোখের আলো না থাকলেও এই শিক্ষার্থী কুমিল্লা বোর্ড থেকে এসএসসিতে ৯ম, ঢাকা বোর্ড থেকে এইচএসসিতে ১৭তম স্থান অধিকার করেছিলেন। এরপর ভর্তি পরীক্ষায় ৩৮২তম মেধাতালিকা লাভ করে ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।  

...অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর তায়বুল হক। বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৬ বছরে আমরা ১৮ বছর অতিক্রম করেছি। ফেনী ইউনিভার্সিটি এখন ১৮ বছরের তরুণ। বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে এখানে।  

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহীনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, শাহীন আলোকিত মানুষ। সে অন্তরের আলোয় আলোকিত। তার থেকে শিক্ষা নিয়ে অনুপ্রাণিত হবে নবীনরা, এমনটাই প্রত্যাশা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের পক্ষ থেকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ডা. এ এস এম তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়োজিদ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি কাউন্সিল স্বাধীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা খুব শিগগির বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সাড়ে দশ একর জায়গায় অবকাঠামোর নকশা তৈরির জন্য একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করবো ইনিস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ-আইএবিএ’র মাধ্যমে।  

এছাড়া আগামী তিন মাসের মধ্যে ফেনী ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রী হোস্টেল চালু হবে বলেও জানান তিনি।

নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ। তিনি বলেন, আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়, তবে সেটা আমরা প্রতিনিয়ত সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করছি। এবার আমাদের শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আমাদের এখানে সব শিক্ষক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা। তাদের কেউ কেউ আবার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এসেছেন।  

প্রফেসর শাহ আরও বলেন, দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে যদি সঠিকভাবে জরিপ করা হয় তাহলে ফেনী ইউনিভার্সিটি ১৫-২০ এর মধ্যে থাকবে। অথচ এখানে পড়ালেখার খরচ অনেক কম।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক বুসরাত জেসমিন তৃষার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক আবুল কাশেম।  

পরে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এসএইচডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।