জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের নবীন ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার পরীক্ষায় মোট অংশ নেন ১০৯ জন শিক্ষার্থী। যাতে মোট কৃতকার্য হয়েছেন মাত্র ৪৯ জন শিক্ষার্থী।
অকৃতকার্যদের মধ্যে ‘ম্যাথমেটিকাল ম্যাথোড’ কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছে পুনঃভর্তির ৩০ জন ও নিয়মিত ৩ জন শিক্ষার্থী। ‘ম্যাকানিকাল’ কোর্সে পুনঃভর্তি অকৃতকার্য হয়েছে ৪০ জন, নিয়মিত ১১ জন শিক্ষার্থী। ‘ল্যাব’ এ অকৃতকার্য হয়েছে পুনঃভর্তি ২১ জন, নিয়মিত ৩ জন শিক্ষার্থী। ‘ফিজিকাল কেমিস্ট্রি’তে অকৃতকার্য হয়েছে পুনঃভর্তি ৪১ জন, নিয়মিত ৬ জন শিক্ষার্থী। ‘ক্যালকুলাস’ কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছে পুনঃভর্তি ৪৮ জন, নিয়মিত ২৫ জন শিক্ষর্থী। ফলে ২য় সেমিস্টারে পূর্ণ নম্বর পেতে ব্যর্থ হলে শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হতে পারে আট জন শিক্ষার্থীর। এছাড়া ৫৩ জন শিক্ষর্থীকে পুনঃভর্তি হতে হবে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অকৃতকার্য বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বিভিন্ন কারণে পুনঃভর্তি হয়েছিলেন। যাদের ৪৫ জনই অকৃতকার্য হয়েছে। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ১৫ জন। যাদের অধিকাংশই ইনকোর্সে যথেষ্ট নম্বর না পাওয়াকে ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনে মূল কারণ হিসেবে দায়ী করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, বিশেষ করে যারা পুনঃভর্তি হয়েছিলাম তারাই এই ফল বিপর্যয়ের মধ্যে বেশি হারে পড়েছি। কারণ পুনঃভর্তি হতে দেরি হওয়ায় অধিকাংশ কোর্সের ক্লাস শুরু ও মিডটার্ম পরীক্ষা মিস হয়েছে। ফলে ইনকোর্সে যথেষ্ট নম্বর ছিল না। যার ফলশ্রুতিতেই ফলাফলের এমন রেকর্ড বিপর্যয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অধিকাংশ কোর্স শিক্ষকরা জানান, পুনঃভর্তির ফলেই সেমিস্টার ফাইনালে এমন ফল। অকৃতকার্য হওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী ২য় বর্ষে ক্লাস শুরু করলেও পর্যাপ্ত ফলাফল না থাকায় ১ম বর্ষে পুনঃভর্তি হয়েছে। ফলে তারা সব ক্লাস করতে পারেনি এবং কিছু কিছু কোর্সের মিড টার্মও মিস করেছেন, যার ফলেই মূলত এমন বিপর্যয়।
এছাড়া প্রশ্নপত্র মডারেশন পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক। তাদের মতে, ইন্টারনাল ও এক্সটার্নাল দুই জায়গা হতে প্রশ্ন সংগ্রহ করার কারণে অনেক সময় প্রশ্নপত্র মানের দিক দিয়ে পেছনে পড়ে যায়। অনেক প্রশ্ন চলে আসে যা কোর্স শিক্ষক হয়তো ছেড়ে গিয়েছেন। তবে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য এমন ফলাফল হওয়ার বিষয়টি অবান্তর বলেও মত তাদের। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রতিটি উত্তরপত্র ২ জন বা ক্ষেত্রবিশেষে ৩ জন শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়িত হয়। ফলে এক্ষেত্রে ভুল বা কারো বিরাগের বশবর্তী হয়ে কম নম্বর পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
ফলাফলে এমন ভরাডুবির বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আইন-উল-হুদা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে যারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হয় তারা বেশিভাগই ২য় দফায় মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির চেষ্টা করে। ফলে এদের অনেকেই নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না, বা নেয় না।
এছাড়া রাজনৈতিক একটা ‘ফ্যাক্টর’ কাজ করে এখানে যার জন্যেও অনেকে পুনঃভর্তি হয়। এরকম বিভিন্ন কারণে যারা কোর্সের এসেসমেন্ট এ ভালো নম্বর তুলতে পারেনি তাদেরই বেশিরভাগ অকৃতকার্য হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৯
কেডি/আরএ