বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় আরেফিন মাতিন আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মস্থলে যোগ দেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর নবনিযুক্ত উপাচার্যকে অনেকে ফুল ও ক্রেস্ট দিতে এলেও তিনি কারও কাছ থেকে তা গ্রহণ করেননি। তখন উপাচার্য আরেফিন মাতিন জানান, ভালো কাজ করলে বিদায়ের দিন কেউ ফুল দিলে তা গ্রহণ করবেন তিনি।
আরেফিন মাতিন বলেন, আমি আগেই বলেছি, আমি যেদিন যোগদান করবো সেদিন কোনো ফুল-ক্রেস্ট-ব্যানার নিয়ে আসবেন না। আমি যেদিন চার বছর মেয়াদ শেষ করবো, সেদিন যেন আপনারা ফুল দিয়ে বিদায় দিতে পারেন, আমি যেন ভালোবাসা নিয়ে যেতে পারি সেজন্য সবার সহযোগিতা চাই। আর আমি সেদিনের অপেক্ষায় থাকবো, যেদিন বরিশালবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার ভালোবাসা নিয়ে যেতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই আমি মনে করি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বছরের শুরুর দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিলে ইমামুল হককে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়। এরপর গত ৩ নভেম্বর এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয় আরেফিন মাতিনকে। সততা নিয়ে যারা কাজ করবে তাদের সঙ্গে সবসময় আছি
নবনিযুক্ত উপাচার্য বলেন, একটি নির্দিষ্ট সময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিল না, সেসময়ে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে হয়তো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু আমি একটি মোটো নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। সেটি হলো, শিক্ষা ও গবেষণার কার্যক্রমকে উন্নীত করার সঙ্গে সঙ্গে সহ-শিক্ষা অর্থাৎ এক্সট্রা কারিকুলামের যে কার্যক্রম রয়েছে তার আরও উন্নতি ঘটিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি দেওয়া। এজন্য আমাকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমেরও সুযোগ করে দিতে হবে। আর সেই জায়গা থেকেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করতে চাই। এজন্য সর্বস্তরের বরিশালবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন, আর আমি তা চাই।
আরেফিন মাতিন বলেন, আমার প্রথম কাজ হবে প্রথম বর্ষের স্থগিত থাকা ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা। আমরা এরইমধ্যে একটি স্টাডি করেছি, আশা করি দ্রুতসময়ের মধ্যে আমরা ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করবো। আর যদি শিক্ষা কার্যক্রমকে যথাযথভাবে পরিচালনা করা যায়, তাহলে সেশন জট কমানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আমার শক্তি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর সহযোগী শক্তি আপনারা সাংবাদিকরা। এই শক্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে চাই। মনে রাখতে হবে, সবার সহযোগিতায় ভালো কাজ হয়। গণমাধ্যমের ভূমিকা সবসময় ইতিবাচক হতে হয়, নেতিবাচক নয়। বরিশালের গণমাধ্যমের কাছে আহবান করবো, এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আপনাদের, আমি চার বছরের জন্য নিযুক্ত হয়েছি। আমায় আবার ফিরে যেতে হবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি শিক্ষা-গবেষণা এবং পাশাপাশি সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করাতে চাই। সেই জায়গায় গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে, আপনারা যত ইতিবাচক সহায়তা করবেন, তত আমরা এগিয়ে যাবো।
ভিসি বলেন, আমি চাই সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু অসৎ ও অন্যায্য লোক নিয়ে কাজ করতে চাই না। আমার স্পষ্ট একটা বার্তা, সততার সঙ্গে যারা কাজ করবে তাদের সঙ্গে সবসময় আছি, অন্যথায় দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
এমএস/এইচএ/