ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারার ফুল

‘কে এলো কে গেলো ভাবি না’

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
‘কে এলো কে গেলো ভাবি না’ শাকিব খান-ছবি: নূর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

‘বসগিরি’ ছবির তৃতীয় ধাপের শুটিং চলছে এফডিসির তিন নম্বর ফ্লোরে। ছবিটিতে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খান।

সোমবার (১৩ জুন) কলকাতার ডাকসাইটে প্রযোজক অশোক ধানুকা হাজির ছিলেন শুটিংস্পটে। কাজের ফাঁকে শাকিব সময় দিচ্ছিলেন অতিথিকে। তারা জরুরি কথা বলছিলেন সেটা আন্দাজ করা যাচ্ছিলো। অশোক ধানুকাকে পাশে রেখে বাংলানিউজের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন শাকিব খান- 

বাংলানিউজ: এবারের ঈদে আপনার কয়টি ছবি মুক্তি পাচ্ছে?
শাকিব খান:
এখনও এটা বলা যাচ্ছে না। আরেকটু সময় গেলে বলা যাবে। তবে দুটি ছবি মুক্তি পাবে, এটা নিশ্চিত।  

বাংলানিউজ: মুক্তির মিছিলে তিনটি ছবির নাম শোনা যাচ্ছে।
শাকিব:
হ্যাঁ। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘শিকারি’ তো প্রস্তুত। এটা সেন্সর বোর্ডে জমা পড়েছে। মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘সম্রাট’ আর শামীম আহাম্মেদ রনির ‘মেন্টাল’ও প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত এ দুটির মধ্যে একটার মুক্তি পেছাবে বলে মনে হচ্ছে।  

বাংলানিউজ: এতোদিন ঈদে আপনার ছবির পাশাপাশি দেশের অন্য নায়কদের ছবি মুক্তি পেতো। এবার কলকাতার জিতের ‘বাদশা দ্য ডন’ মুক্তি পাচ্ছে। অাপনার ছবিতে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন?     
শাকিব:
জিতের ছবি এর আগেও এখানে মুক্তি পেয়েছে। সেটার ফল সবাই জানেন। কে এলো কে গেলো এসব নিয়ে আমি ভাবি না। আমি নিজের কাজেই মনোযোগটা ধরে রাখি। নিজের কাজেই ধ্যান দিতে চাই। অন্যকে নিয়ে ভাবতে চাই না। আমার ছবিটা কীভাবে ভালো হবে, দর্শক যেন উপভোগ করতে পারে, এসব নিয়ে ভাবি। কার ছবি মুক্তি পেলো সেটা আমার কাছে মুখ্য নয়।  

বাংলানিউজ: ‘শিকারী’ ছবির মাধ্যমে আপনার নতুন পথচলা শুরু হলো। এজন্য আপনি একটু বেশি খেটেছেন? 
শাকিব:
(হাসি) এটা ঠিক। দীর্ঘদিন ধরে ছবিটির শুটিং করেছি। এর পোস্টার থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয় আমার ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে। ফেসবুকে সেটা টের পাচ্ছি। শুনলাম সেন্সর বোর্ডের সদস্যরাও ছবিটির প্রশংসা করেছেন। আমার বিশ্বাস এটা আনকাট ছাড়পত্র পাবে, পাশাপাশি প্রশংসাপত্রও পাওয়ার যোগ্য ছবিটি। আমি মনে করি, ‘শিকারী’ মানুষকে ভাবাবে, কাঁদাবে, আবার আনন্দও দেবে। আরেকটা বিষয় যোগ করি, অনেকে অভিযোগ করেন, আমাদের অনেক ছবিই নাকি তামিল সিনেমার মতো। ‘শিকারী’র ক্ষেত্রে এমনটা মনে হবে না। এটাকে মনে হবে আধুনিক কোনো বাংলা ছবি। এখানে যুগোপযোগী অ্যাকশন, বৈচিত্রময় লোকেশন আর একটা দারুণ গল্প আছে। রবীন্দ্রসংগীতও যে এতো সুন্দরভাবে ব্যবহার করা যায়, এটা আমাকে অবাক করেছে। ছবিটিতে অভিনয় করতে পেরে আমি ভাগ্যবান।  

বাংলানিউজ: বোঝা যাচ্ছে, যৌথ প্রযোজনার প্রথম ছবি নিয়ে আপনি বেশ উচ্ছ্বসিত। এরপর নিশ্চয়ই নিয়মিত কাজ করবেন?
শাকিব:
সবে তো শুরু হলো। অনেকের সঙ্গেই কথা চলছে। এই যে আঙ্কেলও (পাশে বসা অশোক ধানুকাকে দেখিয়ে) চেষ্টা করছেন ভালো কিছু ছবি করার জন্য। আমি মনে করি, যৌথ চেষ্টায় ভালো কিছু হবে। আমাদের আছে প্রায় ১৮ কোটি দর্শকের বিশাল বাজার। একসময় আমরা যখন কোটি টাকা খরচ করে ছবি বানিয়েছি, তখন কলকাতা ছবিপ্রতি খরচ করেছে ৩০ লাখ। এখন আমাদের অবস্থান একটু নাজুক। তাই বাজার বাড়ানোর চিন্তা করছি।  

বাংলানিউজ: কিছুদিন আগেও যৌথ প্রযোজনার বিপক্ষে আপনার অবস্থান ছিলো। এখন কী ভাবছেন?
শাকিব:
আমি মনে করি, বাংলা-বাংলার মধ্যে এতো পার্থক্য রাখার কোনো মানেই হয় না। দুই বাংলার সংস্কৃতি ও ভাষায় মিল আছে। যে সুযোগটা তৈরি হয়েছে, তাতে দুই ইন্ডাস্ট্রি মিলে একটা বড় ইন্ডাস্ট্রি হতে যাচ্ছে। যৌথ প্রযোজনার সুবাদে আজ আমাদের দেশের ছবি লন্ডনের সুইসাইড স্কোয়াডের মতো জায়গায় শুটিং হচ্ছে। এটা খুবই ইতিবাচক দিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য। এটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো সবাই মিলে আরও কিছু সুন্দর পরিকল্পনা করছে।  

বাংলানিউজ: ভালো ছবি তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহের সুদিন ফিরবে কবে?
শাকিব:
সব তো একসঙ্গে বদলানো সম্ভব নয়। ছবির মানোন্নয়ন হচ্ছে। হলেরও সুদিন ফিরবে। এখন সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়ছে। পুলিশ প্লাজা, ধানমন্ডি, উত্তরা, গুলিস্তানেও সিনেপ্লেক্স হচ্ছে- এভাবেই চিত্রটা পাল্টে যাবে। আমি এটা সবসময় বিশ্বাস করি।  

বাংলানিউজ: কলকাতার এসকে মুভিজের পাশাপাশি শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সঙ্গেও নাকি কয়েকটি ছবির চুক্তি করেছেন?
শাকিব:
এটা আসলে এখনও চূড়ান্ত নয়। আনুষ্ঠানিকভাবে বলাও সম্ভব নয়। অনেকের সঙ্গে অনেক ধরনের আলোচনা চলছে। কাজ তো হতেই পারে। সবার উদ্দেশ্য এক- ছবি তৈরি করা। কলকাতায় এসকে মুভিজ চেষ্টা করছে, আমাদের দেশে জাজ মাল্টিমিডিয়া চেষ্টা করছে। এ ছাড়া আমার প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস থেকেও ছবি তৈরি হবে।  
 
বাংলানিউজ: আপনি তো ওজন কমিয়েছেন। এখন কী ঠিক আছেন বলে মনে হয়?
শাকিব:
‘শিকারী’তে আমার লুক দেখে সবাই প্রশংসা করছেন। ভক্তরা বলছে, ‘দিস ইজ আওয়ার সুপারস্টার’। ‘বসগিরি’তেও তেমনটাই আছি। কিন্তু এর জন্য আমাকে ব্যাপক শ্রম দিতে হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, এই ফিজিক্সেও (শারীরিক) আমি ফিট নই, আমাকে আরও নিরীক্ষা করতে হবে আউটলুক নিয়ে। কারণ আমি দর্শকদের প্রিয় আসনে বসে আছি, আমাকে দায়িত্বের চাপটাও নিতে হচ্ছে।

বাংলানিউজ: ‘বসগিরি’র কাজ নিয়ে আপনি কতোটা সন্তুষ্ট? 
শাকিব:
‘লাভ ম্যারেজ’ ছবি মুক্তির সময় বলেছিলাম, এই ছবি কাউকে হাসাবেও না কাঁদাবেও না। কিন্তু এটা একটা মজার ছবি। ‘বসগিরি’ও তাই। পুরো মজার একটি ছবি। দর্শক এটা বেশ উপভোগ করবেন বলে বিশ্বাস করি। এটা আগামী ঈদুল অাজহায় মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।