বাংলানিউজকে হীরা বলেছেন, এগুলো সব নীলা চৌধুরীর চক্রান্ত। প্রতিবছর ৬ সেপ্টেম্বর এলে তিনি কিছু একটা করার চেষ্টা করেন।
মৃত্যুর ২২ বছর পর এবার রুবিকে দিয়েই তিনি চক্রান্ত শুরু করেছেন বলে মন্তব্য হীরার।
‘জনপ্রিয়তায় ভাটা আর মায়ের আচরণে আত্মঘাতী সালমান’
বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে নগরীর নিজ বাসভবনে বাংলানিউজের মুখোমুখি হন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
সালমান শাহ খুন হয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবির ফেসবুকে একটি ভিডিওবার্তা নিয়ে দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এরপর রুবিকে দেশে ফিরিয়ে এনে জবানবন্দি নেয়ার পাশাপাশি সালমানের শ্বশুরকেও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন নীলা চৌধুরী।
সালমানের মায়ের মতো হীরাও চান, রুবিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। তার জবানবন্দি নেয়া হোক। তবে রুবির বক্তব্যের জন্যই তার সঙ্গে নীলা চৌধুরীর সম্পৃক্ততার সন্দেহ করছেন হীরা।
‘আমি রুবিকে চ্যালেঞ্জ করছি, উনি দেশে আসুক। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। দেশে আইনের শাসন আছে। এসে উনার যদি কোন বক্তব্য থাকে উনি পিবিআইকে বলতে পারেন। ’
হীরা বলেন, আমি জাতীয় পদকপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ। ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলাম। দীর্ঘদিনের ম্যানেজার। আমি আইনের উর্দ্ধে নই। আমি বাংলাদেশের আইন মেনে চলি। বাংলাদেশের আইনকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমি উনাকে (রুবি) অবশ্যই দেশে আসার অনুরোধ জানাই।
‘কিন্তু উনি আসবেন কি না আমি জানি না। কারণ উনার একেকদিন ফেসবুকে একেকরকম ম্যাসেজ পাই। একটা কথার সাথে আরেকটা কথার মিল পাওয়া যায় না। একবার বললেন, চার মাস আগে তার সঙ্গে নীলা চৌধুরীর ঝগড়া হয়েছে। আবার এখন দেখছি নীলা চৌধুরী রুবির পক্ষে কথা বলছেন। ’
‘তাহলে চার মাসে কি এমন বোঝাপড়া হয়েছে যে, নীলা চৌধুরী রুবির পক্ষে কথা বলছেন, যাকে তিনি সালমানের মৃত্যুর জন্য অতীতে দায়ী করেছিলেন। এজন্য বলছি, নীলা চৌধুরীর চক্রান্ত, হতে পারে। ’ বলেন হীরা।
তবে সালমান শাহ’র মৃত্যুর সংবাদ তখনকার সালমান-সামিরার পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রুবিই ফোন করে জানিয়েছিলেন বলে তথ্য দিয়েছেন হীরা।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে হীরা আরো জানান, সালমানের মরদেহের সঙ্গে তার স্ত্রী সামিরাকে সিলেট যেতে দেননি নীলা চৌধুরীরা।
‘সালমানকে অ্যাম্বুলেন্সে মেডিকেলে নেয়া হল। তারপর তার লাশ নিয়ে ওরা বাসায় ফিরল। তারপর সিলেট যাচ্ছিল। আমার মেয়েও যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে যেতে না দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিল। খালি পায়ে, কাপড়চোপড় ছাড়াই বের করে দিল। সে অনেক কাঁদছে, তাকে সিলেট নিয়ে যায়নি। ’
‘আমার এক ফ্রেন্ড, যিনি ইনকাম ট্যাক্সের ডেপুটি কমিশনার ছিলেন, তিনি এসে সামিরাকে নিয়ে গেলেন দোতলায় নিজের বাসায়। ওরা বাসা লক করে দিয়ে সিলেট চলে গেছে। তারপর দুইদিন পর ওরা এসে বাসায় ঢুকেছে। আমার মেয়েকে আমার বড় বোনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ধানমণ্ডিতে। ’ বলেন শফিকুল হক হীরা।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জনপ্রিয়তায় আলোড়ন তোলা চিত্রনায়ক শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহ’র মরদেহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে তার নিজের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
বিপুল সংখ্যক ভক্তের কাছে গত ২২ বছর ধরে মৃত্যুর রহস্য অমীমাংসিত থাকা মামলাটির এখন তদন্তে আছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় বসবাসরত রুবি ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চায়নিজ মানুষ। ’
ওই ভিডিওবার্তা প্রকাশের পর সালমান শাহ’র মৃত্যু আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৭
আরডিজি/টিসি/জেডএম