১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এই আনন্দ মেলায় দেশজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে নানা রঙে সাজিয়ে তোলা হয় সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণ। তাপদাহকে উপেক্ষা করে উপচেপড়া দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণে সারাটা দিনই ছিল উৎসবমুখর।
রেডিও রূপসী বাংলা আয়োজিত এ মেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল বাংলাদেশি, ভারতীয় এবং প্রবাসী জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দর্শনার্থীরা প্রাণভরে উপভোগ করেন তাদের অনন্য পরিবেশনা।
সুরের মুর্ছনায় অনুষ্ঠানটি মাতিয়ে তোলেন বাংলাদেশি জনপ্রিয় শিল্পী এস আই টুটুল, কনক চাঁপা, রিজিয়া পারভিন। এছাড়া দুজন ভারতীয় সারগাম ফাইনালিস্ট সংগীতশিল্পী গারলিন কর ও জগমোহন সিং গান গেয়ে দর্শকদের মন ভুলিয়েছেন। গার্গি দুগাল এবং আরিয়া ডান্স অ্যাকাডেমির সদস্যরা দর্শকদের মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানটিতে ডালাস, অস্টিন, হিউস্টন, ওকলাহোমাসহ আশপাশের শহর ও অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠন ও ব্যান্ড তাদের সংগীত ও পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। মেলায় আগত দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালিতে অনুষ্ঠানস্থল আনন্দজোয়ারে ভেসে চলে। নির্ধারিত সময় কখন যে শেষ হয়ে যায় অনেকেই তা খেয়াল করতে পারেননি। ফলে ‘আনন্দ মেলা’ সত্যিকারের আনন্দমেলায় পরিণত হয় সেদিন।
পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা যার হাতে ছিল, তিনি রেডিও রূপসী বাংলার ডিরেক্টর ও হোস্ট রাহী ইয়াহিয়া। রেডিও রূপসী বাংলার সিইও এবং মেলার কনভেইনার নূর ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশী সংখ্যক লোক সমাগম হয়েছে মেলায়। যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আরো আশাবাদী করে তুলেছে। কোর টিমের লিড মেম্বারদের অক্লান্ত পরিশ্রম সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। যাদের নাম অবশ্যই স্মরণ করতে চাই তারা হলেন- মহিউদ্দিন, তৃণা, হান্নান, তারেক, নাঈম, ধ্রুব, মনসুর ও শারমিন। ’
এই আয়োজনের র্যাফেল ড্র’র পর্বটিও ছিল প্রাণবন্ত। অনুষ্ঠানের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান। সমাজের বিভিন্ন স্তরে অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদানের ইচ্ছা থেকে সমগ্র আমেরিকার সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে নির্বাচিত করা হয় ‘অবাক’-এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট মরহুম রাশেদ হুসাইনকে। ১ হাজার ডলার সম্মাননাসহ স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয় তাঁর সহধর্মিনী গুলশান হুসাইন মিলিকে। এসময় সকলে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালনের মাধ্যমে রাশেদ হুসাইনকে সম্মান প্রদর্শন করেন।
বাংলা সংগীত ও নৃত্যের সমন্বয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দর্শকদের মন কেড়েছে। খাবারের স্টলেও ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। মেলায় বেশকিছু স্টলে দেশিয় পোশাক প্রদর্শিত হয়েছে। সেই সাথে ছিল গহনা ও প্রসাধনীর সমাহার। ফলে আগত দর্শকরা যেন ফিরে পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গ্রামের মেলাকে।
বাঙালি সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম সাউথ এশিয়ান ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্টিভাল ‘আনন্দ মেলা’ এসে সকলেই আনন্দ করেছে পরিবার-পরিজন নিয়ে। উপস্থিত হয়ে আনন্দ মেলাকে গৌরবোজ্জ্বল করেছেন বিভিন্ন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আনন্দমেলায় বাংলাভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
এমকেআর