ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আলোড়ন তোলা কিছু গান

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আলোড়ন তোলা কিছু গান

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসির মনোবলকে উদ্দীপ্ত করতে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচারিত গানগুলো মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা যুগিয়েছিল। নিঃসন্দেহে ওই সময়ে প্রচার হওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলোই ছিল জনজাগরণের মূল হাতিয়ার-শক্তি। মহান বিজয় দিবসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেরা কিছু গানের তালিকা বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

জয় বাংলা, বাংলার জয়

দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ’র কণ্ঠে এই গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেরা গান। গানটির কথা লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

সুর করেন আনোয়ার পারভেজ। লাল-সবুজের বুকে যতদিন সূর্য উঠবে, এই গান ও তার আবেদন ততদিন থাকবে।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি

গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হওয়ার পর পুরো কলকাতাতেও এর বন্দনা শুরু হয়। যুদ্ধ চলাকালে এই গান পথে-ঘাটে, রাস্তায় রাস্তায় দলে দলে মুক্তিকামী মানুষেরা গেয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরি করেছেন। গানটির গীতিকার গোবিন্দ হালদার। সুর করার পাশাপাশি গানটি কণ্ঠে তোলেন আপেল মাহমুদ। তার কণ্ঠে এই গান বেতারে প্রচারের পর জনমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

কারার লৌহকপাট

এই গানের কথা-সুর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের। গানটি বেশ কয়েকজন শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার করা হয়। এই গানের কথা আর সুর হাজারো ঘরকোনো যুবককে ঘর ছাড়তে বাধ্য করে, স্বপ্ন দেখায় পরাধীনতা গ্লানি মুছে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনার।

তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে

দেশাত্মবোধক চেতনায় জাতিকে এক করার জন্য, একই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত করার জন্য তখন এ রকম গানের বিকল্প ছিলো না। আর আমাদের মুক্তির সংগ্রামে ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ শীর্ষক গানটি জনজাগরণের আরেকটি শক্তি। গানটির কথা ও সুরারোপ করেন আপেল মাহমুদ। যৌথভাবে আপেল মাহমুদ ও রথীন্দ্রনাথ রায়’র কন্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত গানের মধ্যে এটি অন্যতম সেরা।

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে

গোবিন্দ হালদারের কথায় গানটির সুরারোপ করেন আপেল মাহমুদ। এটি কণ্ঠে তোলে জনতার মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়েছিলেন স্বপ্না রায়।

নোঙর তোল তোল

নঈম গহর’র কথায় গানটির সুরারোপ করেন সমর দাস। তার সুরে সমবেত কয়েকজন শিল্পীর কণ্ঠে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত হয়। এই সমবেত সংগীতটি তখন সংগ্রামী সংগীত এবং যুদ্ধের মন্ত্র হিসেবে কাজ করেছিল।

সালাম সালাম হাজার সালাম

আব্দুল জব্বারের কণ্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হওয়ার পর থেকেই মানুষের মুখে মুখে রটতে থাকে এই গান। ফজলে খোদা’র কথায় গানটির সুর করেন আব্দুল জব্বার নিজেই।

একতারা তুই দেশের কথা বল

কিংবদন্তী শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর কন্ঠে একটি কালজয়ী দেশাত্মবোধক এটি। গানটির সুরকার আনোয়ার পারভেজ এবং গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

ছোটদের বড়দের সকলের

গানটি সংগীতশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়ের কণ্ঠে তৎকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হয়। তার কণ্ঠের এই গান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাঙালির মনে দেশপ্রেম জাগাতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছিল। গানটির কথা ও সুর খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া’র।

পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে

গোবিন্দ হালদারের কথায় গানটির সুর করেন সমর দাস। গানটি কয়েকজন শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে প্রচার করা হয়। এটি এমন একটি গান, যার কথা, সুর এবং গায়কী লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী করে তুলেছিল অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাওয়ার।

শোনো একটি মুজিবরের থেকে

গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার’র কথায় গানটি সুরারোপের পাশাপাশি কণ্ঠে তোলেন অংশুমান রায়। এটি ছিল সেই গান, যেটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু হওয়ার আগেই ভারতের কোনো এক বেতার থেকে বাজানো হয়েছিল। পরে স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য নতুন করে কণ্ঠ তোলেন আব্দুল জব্বার।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
ওএফবি/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।