তিনওয়াই কারবারি পাড়ায় বৃহস্পতিবারের (১২ জানুয়ারির) সকাল। শীত তাড়াতে শুকনো কাঠ জ্বালিয়ে গোল হয়ে ভিড় করেছে পাড়াপ্রধান তিনওয়াই মো’র বাড়ির ছোট-বড়রা।
আগুলা পাড়া প্রধানকে জিজ্ঞেস করতে বললেন, ম্রো ভাষার (দমরং বা দওপ্রেং প্রভৃতি) গান। কোমরে মোবাইল গুঁজে শুনছেন তিনওয়াই কারবারির মেয়ে কুমরাই। সেখান থেকেই আসছে ওয়্যারলেসের বিরতিহীন কথার মতো গানের লাইন।
ম্রো দের গানগুলো এরকমই। তাল-লয়-সুরের অতো বৈচিত্র্য নেই। হালকা সুরে লাইনের পর লাইন বলে যাওয়া। সুরের তেমন ওঠানামাও নেই। পুঁথি পড়ার চেয়ে কম সুরে লাইনের পর লাইন পড়ে গেলে যেরকম শোনাবে, ঠিক তেমনই। যাদের গলায় সুর নেই, তাদের মুখে শুনলে মনে হবে- কেবল কথা বলছেন।
রেংমিটচা যেহেতু ম্রো-দেরই একটি ভাষা, সেহেতু এই ভাষার গানের বৈশিষ্টও একই। এমনিতে ভাষাটি বিলুপ্তপ্রায়, মেরেকেটে কুড়ি-বাইশজন জানেন- সেখানে এ ভাষায় গান জানা লোকের সংখ্যা যে আরও কম হবে তা বলাই বাহুল্য।
হলোও তাই। হেডম্যান পাড়া থেকে গান জানেন কেবল ২৯১ তৈনফা মৌজার হেডম্যান মেন পুং ম্রো। তিনওয়াই পাড়া থেকে জানেন কুমরাও ও কমনিং ম্রো। অন্যদিকে, মেনথন পাড়ায় জানেন মেন্নিং ম্রো। সন্ধান পাওয়া ১৬ জনের মধ্যে কেবল চারজনকে পাওয়া গেলো গান জানেন। কয়েকজন অবশ্য সেসময় গভীর বনে ছিলেন, কাজেই তারা জানেন কিনা জিজ্ঞেস করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনওয়াই কারবারি পাড়ায় রেংমিটচা ভাষায় কথোপকথনের পর গান ধরেন কুমরাই ও কমনিং। সঙ্গে গলা মেলান হেডম্যান। এরপর মেনথন পাড়ায় গিয়ে শোনা যায় মেন্নিংয়ের গলায় গান। এই মিলিয়ে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য রেংমিটচা ভাষার গান।
রেংমিটচা ভাষার গান:
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৭
এসএনএস
আগের পর্বগুলো পড়ুন-
** বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচা ভাষা (ভিডিও-পর্ব ২)
** বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচা ভাষা (ডিডিও-পর্ব ১)
** পৌষালি পূর্ণিমায় ছয়জনের আড্ডা জমে রেংমিটচায়
**জুম চাল-কুমড়ায় ভোজ ও রেংমিটচাবৃত্তান্ত
**পাহাড়-ঝিরি পেরিয়ে রেংমিটচার টানে
**‘পাড়ায় গিয়ে রেংমিটচা ভাষার সব দেখাবো’