শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কার্যালয়ে ‘মশা নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন। কালের কণ্ঠ ও ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এপ্রিল মাস থেকে মশা ও জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণের জন্য সভা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সব কয়টি সংস্থার চেষ্টার পরও মশা দেশের মানুষের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মশক নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সফল হয়েছি। এই কাজ আরও বেগবান করা হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা মূলত রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা ছাড়াও মশা নিয়ন্ত্রণে জৈবিক, পরিবেশগত এবং যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় জোর দেয়ার সুপারিশ করেন। তারা বলেন, ডেঙ্গুসহ মশা বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা জরুরি। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সব কয়টি সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে ‘সমন্বিত মশা নিয়ন্ত্রণ গবেষণা কেন্দ্র’ স্থাপন প্রয়োজন।
কালের কণ্ঠ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
মেয়র বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ হয় এদেশে। একটি সিন্ডিকেটকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন মশার ওষুধ আমদানি বন্ধ রাখা হয়। মাত্র কয়েকটি কোম্পানি শুধুমাত্র মশার ওষুধ আনতে পারত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগ এই কাজ করেছে। এই বিভাগের অসাধু এসব কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। মশা নিয়ন্ত্রণে বছরব্যাপী কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওষুধের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণে চতুর্থ প্রজন্মের ওষুধ ব্যবহারের চিন্তা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর আগস্টে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ার কারণে আমাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সিটি করপোরেশনের কোনো কমতি ছিল না ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবেলায়।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আমার পক্ষে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়নি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, মশা সব সময় ছিল। আতঙ্কিত না হয়ে এর সঙ্গে সংগ্রাম করেই আমাদের চলতে হবে।
ওরিয়ন ফার্মার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফ হোসেন বলেন, আমরা মেডিসিন সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করি। তবে এই গোলটেবিল বৈঠকের মতো জনসচেতনতামূলক ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
এছাড়া গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জনস্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব পরামর্শক ড. মুশতাক হোসেন, কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর এ চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী, শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাকিল আহম্মেদ, বাংলাদেশ ডায়াগনস্টিক রিয়েজেন্ট অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম কামরুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান, বিআরবি হাসপাতালের সিইও মেজর ডা. একেএম মাহবুবুল হক (অব.), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. আয়েশা আক্তার, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ, ডেঙ্গুতে সন্তান হারানো বাবা মোহাম্মদ আফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময় : ০১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
এমএএম/ আরকেআর/এসআইএস