বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআরের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এসময় প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. এএসএম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত থাকায় বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও সতকর্তা বাড়ানো হচ্ছে। কয়েকদিন আগে থেকেই সব দেশের প্লেনের যাত্রীদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে সিঙ্গাপুরে ২ জন বাংলাদেশী আক্রান্ত হওয়ায় সিঙ্গাপুর থেকে আসা যাত্রীদের চীন থেকে আসা যাত্রীদের মতোই গুরুত্ব দিয়ে স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। এদিকে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের বিষয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও একটি সম্পূর্ণ প্রতিষেধক আবিষ্কার হতে অন্তত ১৮ মাস অপেক্ষা করতে হবে। আর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, এদের কারো শরীরেই করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
‘সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ১১ জন ও চীনের উহান থেকে ৩০১ জনকে আশকোনার হজ ক্যাম্পে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশীর চিকিৎসা চলছে দেশটির একটি স্থানীয় হাসপাতালে। চীন ফেরতদের মধ্যে এ পর্যন্ত সন্দেহজনক মোট ৫৮ টি নমুনা ও গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এই মুহূর্তে একজন রোগী আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি থাকলেও তার শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ বা উপসর্গ নেই। এছাড়া বিমানবন্দরসহ দেশের সব প্রবেশ পথে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ২৯৪ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে এই সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৮৮১ জন। ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করা যাত্রী ৪১ হাজার ৩৯৯ জন, দুটি সমুদ্র বন্দরে (চট্টগ্রাম ও খুলনার মোংলা) স্ক্রিনিং করা হয়েছে ১ হাজার ৪০৯ জন। এছাড়া অন্যান্য স্থলবন্দরে মোট স্ক্রিনিং করা হয়েছে ৬২ হাজার ৭৩ জনকে । ’
এদিকে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজারেরও বেশি। নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসে বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন, এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লিং। তিনি মনে করেন, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এটি মহামারী আকারে বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। লন্ডনে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
এমএএম/এইচজে