ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদিকে ‘সতর্ক’ করলো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদিকে ‘সতর্ক’ করলো যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনের কথিত বিদ্রোহীদের নির্মূলে পশ্চিমা শক্তির আশীর্বাদ নিয়ে সৌদি আরব সামরিক অভিযানে নামলেও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের ‘সতর্ক’ করে দিলো যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, রিয়াদ যদি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কোনো তৎপরতা দেখাতে ব্যর্থ হয়, তবে ইয়েমেনে অভিযানে তারা আমেরিকার যে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা পাচ্ছে, তা কমিয়ে ফেলা হবে।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি বাহিনী ইয়েমেনের সুন্নিপন্থি সরকারের গদি রক্ষায় ‘ইরানের আশীর্বাদপুষ্ট’ শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের দমনের কথা বললেও প্রথম থেকেই সেখানে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির খবর মিলছে।

এর সবশেষ নজির দেখা যায় গত ৯ আগস্ট। সেদিন সৌদির নেতৃত্বে আরব জোটের বোমা হামলায় একটি স্কুলবাসে থাকা ৪০ শিশু নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৫ বছরের নিচে।

আমেরিকায় বানানো ওই বোমা স্কুলবাসে আঘাত করার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। সেই সমালোচনার বাইরে থাকলো না খোদ সৌদির মদতদাতা যুক্তরাষ্ট্রও।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদফতর পেন্টাগনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদির কর্মকাণ্ডে ওয়াশিংটন প্রশাসনে অসন্তোষ বাড়ছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জ্যামস ম্যাটিস ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যপ্রাচ্য অপারেশন উইংয়ের প্রধান জেনারেল জোসেফ ভোটেল আলাদাভাবে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। সৌদির নেতৃত্বে বিমান হামলায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের দায় নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছেন তারা।

ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই সৌদিকে বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্তু এখন স্পষ্টতই মার্কিন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করতে হচ্ছে, তাদের পরামর্শ কাজে আসছে না।

ওই হামলার পর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিস সাংবাদিকদের জানান, স্কুলবাসে হামলার ঘটনাটির বিষয়ে জানতে তিনি শীর্ষ একজন জেনারেলকে সৌদি পাঠাচ্ছেন। তাতেই রিয়াদের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের ‘ছাড় না দেওয়ার অবস্থান’ স্পষ্ট হয়ে যায়।

এরপর মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কমোডর রেবেকা রেবারিচ বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনা মার্কিন সামরিক নেতাদের এটাই নির্দেশ করেছে যে- বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ নজর দরকার এবং সফরকারী কর্মকর্তা (ম্যাটিসের পাঠানো জেনারেল) এ বিষয়ের ওপরই জোর দিয়েছেন। তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন, পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার দায় নিরূপণপূর্বক প্রতিরোধকল্পে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

পেন্টাগনের ওই কর্মকর্তাদ্বয় বলেন, ম্যাটিসের পাঠানো ওই জেনারেলের বার্তাটিই ছিল মার্কিন প্রশাসনের সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা হ্রাস করার ইঙ্গিতমূলক। যদিও এমন কিছু যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত করলে কী ফল দেবে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে এতে যে সৌদি রাজত্বের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে পড়ে যেতে পারে, অন্তত তাদের আস্ফালন কমতে পারে, তা অনুমান করাই যায়। তবু যদি নির্বিচারে শিশু হত্যা বন্ধ হয়!

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।