জাতীয় পর্যায়ে দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে চীনা সংস্কৃতির প্রসারের অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়।
ওইসব দোকানের কর্মচারীদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, সম্প্রতি বেইজিংয়ে হালাল পণ্য বিক্রেতা ১১টি রেস্তোরাঁ ও দোকানকে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থাৎ অর্ধ চন্দ্রাকৃতি চিহ্ন, আরবি হরফে লেখা ‘হালাল’ শব্দ সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। বেইজিংয়ে ‘হালাল’ লেখা অন্তত ১ হাজার দোকান রয়েছে।
জাতিগত ও ধর্মবিষয়ক কমিটি এটিকে ‘জাতীয় সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছে। দেশটির ন্যাশনাল এথনিক অ্যাফেয়ার্স কমিশনের কর্মকর্তা ঝা জি বলেন, চীনের সংবিধান সকল সংখ্যালঘুর আইনগত অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করে। কিন্তু ‘জাতীয় নির্দেশ’ প্রসঙ্গে বিস্তারিত কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
সরকারি কার্যালয়ের বেশ কিছু কর্মী জানান, কয়েকদিন আগে এক নুডলস দোকানের ম্যানেজারকে তার প্রতিষ্ঠানে আরবি হরফে লেখা ‘হালাল’ বিলবোর্ড সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে সে নির্দেশ অনুসরণ করতেও দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ম্যানেজার জানান, ‘তারা (কর্তৃপক্ষ) বললো, এসব বিদেশি সংস্কৃতি, তোমার উচিৎ বেশি বেশি চীনা সংস্কৃতির চর্চা করা। ’
মুসলিমদের মধ্যে চীনাসংস্কৃতির প্রসারের আওতায় এরই মাঝে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে পূর্বের মধ্যপ্রাচ্যীয় কায়দায় নির্মিত মসজিদের গম্বুজ সরিয়ে চীনা প্যাগোডার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে।
চীনে ২ কোটি মুসলিম বসবাস করে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিলেও ধর্মে বিশ্বাসীদের কম্যুনিস্ট আদর্শে ভেড়াতে একের পর এক উদ্যোগ হাতে নিয়ে চলেছে দেশটির সরকার। তবে শুধু মুসলিমরাই সেখানে এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে তা নয়।
এরই মাঝে অবৈধ ঘোষণা করে খ্রিস্টানদের বেশ কিছু গুপ্ত গির্জাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশটিতে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে কিছু গির্জার ক্রুশচিহ্ন।
যদিও ২০০৯ সালে পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম ও সংখ্যাগুরু হান সম্প্রদায়ের মধ্যে এক দাঙ্গার ফলে মুসলিমরা বিশেষভাবে শান্তি বিনষ্টকারী হিসেবে নজরে আসে।
পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক পুনর্বাসনের দাবিতে সেখানকার কয়েক লাখ উইঘুর মুসলিমকে ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়। যদিও অনেকের দাবি ওইসব ক্যাম্পে মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী বিতর্কের মুখে পড়েছে চীন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৯
এইচজে/এমএ