আরবি ও ইংরেজিতে লেখা হাদিসটির অর্থ হলো- ‘হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করো। কারণ তারা জানে না।
ইসরায়েলি লবির প্রভাব নিয়ে সমালোচনা করায় কয়েক সপ্তাহ আগে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরে-বাইরেও তোপের মুখে পড়েন ইলহান। এমনকি তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় একাধিকবার। চটে গিয়ে তাকে কংগ্রেসের বৈদেশিক কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইলহান তার বক্তব্য ফিরিয়ে নিলেও ট্রাম্প তাকে তাচ্ছিল্য ও ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি ওমরের জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা। আমি খুবই দুঃখিত ভুলে গিয়েছিলাম, তিনি ইসরায়েলের মাধ্যমে প্রভাবিত নন। ’
এই ব্যঙ্গাত্মক বক্তব্য ছেড়ে দেননি ইলহান। তিনি ট্রাম্পের বিভিন্ন সময়ের বিদ্বেষ-পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ট্রাম্প তার পুরো জীবনে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলে এসেছেন। ইহুদি, মুসলিম, আদিবাসী, কৃষ্ণাঙ্গ—সবাই তার বিদ্বেষের শিকার হয়েছে। আমার কথায় যে অন্য মানুষ আহত হতে পারে, সে শিক্ষা আমি পেয়েছি। কিন্তু আপনি (ট্রাম্প) কবে সে শিক্ষা পাবেন?
এরপর এই হাদিস টেনে জবাব দিলেন ইলহান ওমর। এ হাদিসটি বর্ণনা করেন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)। তিনি বলেন, “আমি যেন রাসুল (সা.) এর দিকে চেয়ে আছি আর তিনি বর্ণনা দিচ্ছেন এক নবীর; যাকে তার জাতি নির্যাতন করে রক্তাক্ত করে ফেলে। আর তিনি নিজের মুখাবয়ব থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলেন, ‘হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করো। কারণ তারা জানে না। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৩৪৭৭; মুসলিম, হাদিস নং: ১৭৯২)
হাদিসবিশারদরা বলেন, রাসুল (সা.) যে নবীর বর্ণনা দিয়েছেন, সেই নবী মূলত তিনি নিজেই ছিলেন। তায়েফ অঞ্চলে কাফেরদের নির্মম অত্যাচারে ও পাথরের আঘাতে জর্জরিত হয়ে দীর্ঘ দোয়া করেছিলেন তিনি। দোয়ায় তিনি অত্যাচারীদের জন্য বদদোয়া না করে (অভিশাপ না দিয়ে) উল্টো তাদের কল্যাণ ও সৌভাগ্যের দোয়া করেছিলেন।
ইলহান ওমরের জন্ম সোমালিয়ায়। সেখান থেকে উঠে আসা প্রথম আমেরিকান-মুসলিম আইনপ্রণেতা তিনি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত হন তিনি।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
এমএমইউ/এইচএ/