তবে কোথায়, কারা, কীভাবে এ বিক্ষোভ করবে, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে যাই হোক উত্তপ্ত আবহে মোদীর সফর নিয়ে প্রশাসন বেশ চিন্তায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিধানসভা অধিবেশনের পর এক সংবাদ বৈঠকে সিপিএম নেতা বলেন, সিএএ-এনআরসি নিয়ে গোটা দেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে প্রতিদিন প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এ ‘কালো আইন’ প্রত্যাহার করতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাদের মতো করে বিরোধিতা করছে।
তিনি বলেন, এ বিরোধিতার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে টের পাচ্ছেন প্রতিদিন। সম্প্রতি তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকে গিয়ে সশরীরে তা দেখেছেন তিনি। দুই রাজ্যের মানুষ মোদির সফরের সময় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। ১০ থেকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে মোদীর কলকাতায় থাকার কথা। যেদিনই আসুন না কেন পশ্চিমবাংলার মানুষও তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করবে।
তবে কবে, কীভাবে তা এখনি স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। বরং বলা হয়েছে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ, যারা এ আইনের বিরোধিতা করছেন তারা সবাই যেন মোদীকে কালো পতাকা দেখান। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপির ‘বি টিম’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, গোটা ভারত এনআরসি, সিএএ বিরোধিতায় বুধবার (৮ জানুয়ারি) হরতালে সামিল হলো। সেখানে মমতা বন্দোপাধ্যায় হরতালের বিরোধিতা করেছেন। এমনকী কেরালের বামদের মুখ্যমন্ত্রী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিরোধিতা করলে মমতা বাহবা দেন। আর রাজ্যে আমরা আইনের বিরোধিতা করলে আমাদের সমর্থন করেন না। কী চাইছেন মমতা স্পষ্ট করে বলুক।
‘আসাম বিজেপি শাসিত রাজ্য হলেও মোদী সেই রাজ্যে বিক্ষোভের ভয়ে সফর বাতিল করলেন। সেখানে মোদী কি মমতার ভরসায় পশ্চিমবঙ্গে আসছেন? মমতাকে এবার তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। ’
প্রসঙ্গত, সিএএ বিরোধিতা বিক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কায় গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলা ‘খেলো ইন্ডিয়া ইউথ গেমস’ এর উদ্বোধনে থাকছেন না মোদী। ১০ জানুয়ারি গেমসের উদ্বোধন করার কথা ছিল তার। কিন্তু প্রস্তাবিত এ সফর বাতিল করেছেন তিনি।
আসামের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। মূলত এ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আসু)। আসুর তরফে বলা হয়েছে, মোদী যদি গেমসের অনুষ্ঠানে আসেন তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ করা হবে।
এর আগে বিক্ষোভের জেরেই গত ডিসেম্বরে বাতিল হয়েছিল ভারত-জাপান বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজোর বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বিক্ষোভের প্রেক্ষিতেই প্রস্তাবিত ওই বৈঠক হয়নি।
তবে শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ওই সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রস্তাবিত সফর বাতিল করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। মেঘালয় ও অরুণাচলে পৃথক দু’টি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। এবার ফের সেই বিক্ষোভের আশঙ্কাতেই গুয়াহাটিতে গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
ভিএস/এফএম