আদালত আরও বলেন, আমরা তরল দুধ নিয়ে আছি। গুঁড়া দুধের কি অবস্থা সেটাও দেখা দরকার।
দুধে সীসার উপস্থিতি নিয়ে সুয়োমুটো এক মামলার শুনানিতে রোববার (২৯ জুলাই) এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত আরও বলেন, দেশীয় কোম্পানিকে সংশোধনের মধ্যে এনে প্রতিষ্ঠিত করা, কারো ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। দুধের মান নির্ণয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।
আদালতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। বিএসটিআই’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব।
পরে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুধ নিয়ে গবেষণা করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুককে হুমকি দিয়েছে কোম্পানিগুলো। তারা লিগ্যাল নোটিশও দিয়েছে। বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছি।
পরে আদালত আগামী ২০ অক্টোবর আদেশের দিন নির্ধারণ করেন।
রোববার (২৮ জুলাই) হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ পাস্তুরিত দুধে ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ১৪ কোম্পানির দুধ উৎপাদন ৫ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার আদেশ দেন।
এদিকে বিএসটিআই’র আইনজীবী সরকার এম আর হাসান দুধের মান তদারকি করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি বা কমিশন গঠন করা যেতে পারে বলে মত দেন।
গত ১৬ জুলাই ১০ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনায় গ্রহণযোগ্য মাত্রার চাইতে বেশি সীসার উপস্থিতি রয়েছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
এ প্রতিবেদন উপস্থাপনের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বলেন।
মঙ্গলবার আদালতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম তাদের পদক্ষেপের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ১০টি মামলা করেছেন ১০ কোম্পানির বিরুদ্ধে।
কোম্পানিগুলো হল- মিল্কভিটা, ডেইরি ফ্রেশ, ইগলু, ফার্ম ফ্রেশ, আফতাব মিল্ক, আল্ট্রা মিল্ক, আড়ং ডেইরি, প্রাণ মিল্ক, পিউরা, সেইফ মিল্ক।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘গাভির দুধ ও দইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, কীটনাশক, সিসা!’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাভির দুধে (প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া) সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। একই সঙ্গে প্যাকেটজাত গাভীর দুধেও অ্যান্টিবায়োটিক ও সীসা পাওয়া গেছে মাত্রাতিরিক্ত। বাদ পড়েনি দইও। দুগ্ধজাত এ পণ্যেও মিলেছে সীসা।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) গবেষণায় এসব ফলাফল উঠে এসেছে। সংস্থাটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গাভীর খাবার, দুধ, দই ও প্যাকেটজাত দুধ নিয়ে এ জরিপের কাজ করেছে।
ওই প্রতিবেদন নজরে আসার পর ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
ইএস/জেডএস