ঢাকা: প্রথম যাত্রার জন্য রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষায় দেশের সর্বাধুনিক ট্রেন ‘সোনার বাংলা’। শনিবার সকালে উদ্বোধনী আয়োজনের অংশ হিসেবে রঙিন কাপড়, ফুলে মোড়ানো হয়েছে লাল-সবুজ আর সাদা রঙের ট্রেনটি।
জানালার গ্লাস দিয়ে না তাকালে যাত্রীরা ট্রেনটির থামা ও ফের যাত্রা শুরু করে ৭২ কিলোমিটার গতিতে ওঠার কোনো অনুভূতি পাবেন না। বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান সোনার বাংলার পরিচালকদ্বয়।
৭৮৮ নম্বরের সোনার বাংলার প্রথম গন্তব্য চট্টগ্রাম। শনিবার (২৫) জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমলাপুর স্টেশনে সোনার বাংলায় আসন নেবেন। সেসময়ই ট্রেনটির উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে। পরদিন রোববার (২৬ জুলাই) যাত্রীসহ ঠিক সকাল ৭টায় রওয়ানা দেবে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে।
শুক্রবার (২৪ জুলাই) সকালে সোনার বাংলা ট্রেনটি রেলস্টেশনের মূল প্লাটফর্মে নিয়ে আসা হয়। প্রতিদিন সকাল ৭টায় ঢাকা থেকে বিরতিহীনভাবে ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে বিকেল ৫টায় ছেড়ে পাঁচ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে পৌঁছাবে ঢাকায়। শনিবার ছাড়া সপ্তাহের সবদিন এ নিয়মে চলবে সোনার বাংলা। সুবর্ণ এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনটিতে ঢাকায় শুধু কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করবে।
ট্রেনের পরিচালক ফারুক আহমেদ ও কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, সোনার বাংলায় রয়েছে দু’টি এসি স্লিপিং চেয়ার, চারটি এসি চেয়ার, সাতটি শোভন চেয়ার, একটি খাবার গাড়ি ও একটি পাওয়ার কার। প্রতিটি এসি চেয়ারে ৫৫টি, এসি স্লিপিংয়ে ৩৩টি, শোভন চেয়ার ৬০টিসহ ৭৪৬টি আসন রয়েছে। এসি স্লিপিং চেয়ার ১২শ টাকা, এসি চেয়ার ১ হাজার টাকা আর শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ টাকা।
আধুনিক এ ট্রেনটির প্রতিটি আসন করা হয়েছে পর্যাপ্ত জায়গা নিয়ে। শোভন থেকে শুরু করে স্লিপিং- প্রতিটি আসনে যাত্রীরা যাতে আরামে বসতে পারেন সেজন্য এক আসন থেকে আরেক আসনের যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে। লেদারের কোমল আসন এসি ও শোভন সিটগুলোতে।
বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস চালু হয়েছিলো ১৯৯৮ সালে। সুবর্ণ এক্সপ্রেসের ৭০১ নম্বর ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছে। আর ৭০২ নম্বর ট্রেনটি ঢাকা থেকে বিকেল ৩টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম আসে রাত সাড়ে ৮টায়।
ট্রেনটির পরিচালক ফারুক আহমদ বাংলনিউজকে আরও জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে আরামদায়ক ট্রেন হবে ‘সোনার বাংলা’। যাত্রা হবে নির্ঞ্ঝাট ও আনন্দদায়ক। স্টেশন থেকে ছাড়ার পর ঘণ্টায় ৭২ কিলোমিটার গতি তোলার সময়ও যাত্রীরা টের পাবেন না। একইভাবে যখন ব্রেক করা হবে তখনও যাত্রীরা টের পাবে না যদি না গ্লাস দিয়ে বাইরে না তাকান।
এছাড়া ট্রেনের ভেতরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ডিভাইস রয়েছে। রাখা হয়েছে ডিজিটাল অ্যালার্ম ব্যবস্থা। ট্রেনের পেছন থেকে একেবারে ইঞ্জিন পর্যন্ত যাত্রীরা অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবেন। জানান পরিচলকদ্বয়।
ট্রেনটিতে মানসম্মত খাবর সরবরাহ করবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। রমজান মাসে ইফতার বক্স দেওয়া হবে যাত্রীদের। এরজন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না। ভাড়ার মধ্যেই এটা অন্তর্ভুক্ত।
দেশের সর্বাধুনিক এ ট্রেনটিতে এখন সওয়ার হওয়ার অপেক্ষায় যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৬
এসএ/এএ