ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২ মাসেও সংস্কার হয়নি রাস্তাটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
২ মাসেও সংস্কার হয়নি রাস্তাটি ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মৌলভীবাজার: পিচঢালা ৪০ ফুটের সুপ্রশস্ত রাস্তা। এ রাস্তার ৮০ বর্গমিটার জায়গা ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়েছে উঁচু নিচু অনেক গর্তের।

ফলে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

দূরপাল্লার মালবোঝাই ট্রাক এসে রাস্তার মধ্যেখানে খাদে পড়ে আটকে যায়। দেখা যায় দুই-তিনদিনের চেষ্টায় তা উদ্ধার হচ্ছে। যখনই ঘটনাগুলো ঘটছে তখনই যানজট আর জনদুর্ভোগ বেড়ে যায়।

এ যেন রাস্তা নয়, মরণ ফাঁদ। তাও আবার মৌলভীবাজার শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কোর্ট রোডে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের কাছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দশ সহস্রাধিক হালকা ও ভারী যান চলাচল করে। কারণ কোর্ট রোড হয়ে মৌলভীবাজার থেকে ঢাকা, সিলেট ও জেলার সব উপজেলায় যাওয়া সহজ, নিরাপদ, যানজটমুক্ত ও আরামদায়ক।

এছাড়াও সবকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও অফিসের অবস্থান কোর্ট রোডে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভা, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, ৪টি প্রাইভেট কলেজ, ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জজ কোর্ট, সার্কিট হাউস, পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও বাসভবন, জেলা পরিষদ, পাবলিক লাইব্রেরি, ও জেলা প্রশাসকের বাসভবন অন্যতম। তাই প্রতিনিয়তই এ সড়কে অসংখ্য মানুষের যাতায়াত।

কিন্তু দুই মাস ধরে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের কাছের এ সড়কে মাত্র ৮০ বর্গমিটার রাস্তা ভেঙে খাদে পরিণত হয়েছে। তা দেখার যেন কেউ নেই।

অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন বংলানিউজকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন রিকশায় করে আদালতে আসি। কিন্তু দুই মাস ধরে ভাঙা এ জায়গাতে এসে রিকশা ছেড়ে দিয়ে হেঁটে যাই। কারণ আমার চোখের সামনেই কত রিকশা উল্টে যেতে দেখেছি’।

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনই এ ভাঙা জায়গাতে দুর্ঘটনা ঘটে যানজট লেগে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে এখান থেকে কলেজ পর্যন্ত আমাদের হেঁটে যেতে হয়’।

সার্কিট হাউস এলাকার বাসিন্দা মাহিরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ অল্প জায়গাটি এতোদিন ধরে কেন সংস্কার হচ্ছে না বুঝতে পারিনা?’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে একমাস আগেই সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছি। কিন্তু রাস্তার এ অংশটি এখনো সংস্কার করেনি সড়ক বিভাগ’।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাস্তাটি পৌরসভার ভেতর দিয়ে গেলেও এটা ‘সওজ’ এর রাস্তা। এটা আমাদের দায়িত্বে, আমরাই বিষয়টি দেখবো। তাছাড়া আমরাতো কয়েকবার ইটের টুকরা ও মাটি ফেলে রাস্তাটি সংস্কার করেছি’।

বিভিন্ন সময় রাস্তাটি সংস্কারে কত টাকা ব্যয় হয়েছে এবং পূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে উৎপল সামন্ত বাংলানিউজকে বলেন, এসব বিষয়ের যাবতীয় তথ্য সড়ক বিভাগের ওয়েবসাইটে দিয়ে রেখেছি, সেখান থেকে তথ্য নেন।

কিন্তু ১০ আগস্ট পর্যন্ত অনেক ঘাটাঘাটি করেও সড়ক বিভাগের ওয়েবসাইটে কোর্ট রোডের খাদ সংস্কারের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

১০ জুন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত শেরপুর সেতু মেরামতের জন্য মহাসড়কে যান চলাচল ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার পর সব গাড়ি শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ হয়ে যাতায়াত করে। তখন মৌলভীবাজার কোর্ট রোড হয়ে ঢাকা, সিলেটগামী ভারী যান চলাচলের ফলে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের কাছে রাস্তার এ অংশটি ভেঙে যায়। এর পর থেকেই জনসাধারণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।