খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজিরা দেয়া প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, এতিমের টাকা চুরি করে খেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
দুপুরের পর থেকে লাল-সবুজের পোশাক পরে হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে সমাবেশ স্থলে সমবেত হতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ শুরুর আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় উদ্যান। উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
বিএনপি সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন করবে কীভাবে? যদি লুটপাটে ব্যস্ত থাকে।
শেখ হাসিনা বলেন, অত্যাচার নির্যাতন, দুর্নীতি, খুন খারাবি, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি, আর অস্ত্রপচার ছাড়া আর কিছুই তারা করতে পারে নাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পেছাবে না কেন? বিএনপির দোসর জামায়াতে ইসলামী। তারা কারা? যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের বিচার হয়েছে, ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে তারাই ছিলো খালেদা জিয়ার কেবিনেটের মন্ত্রী।
কীভাবে একটা যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রী বানায়? তারা কেন আমাদের দেশকে এগোতে দেবে। তাই দেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত ও পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ৭ বছর পর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে দেখলাম তারা মানুষকে কী দিয়েছিলো। খাদ্য উৎপাদন, স্বাক্ষরতা, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিদ্যুৎসহ সকল ক্ষেত্রে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিলো।
তিনি বলেন, সাধারণত মানুষ সামনে এগিয়ে যায়। আর বিএনপি দেশকে নিয়ে গেলো পিছনে। শুনেছি ভূতের পা নাকি পিছনের দিকে। বিএনপিকে কি ভূতে ধরেছিলো?
পৃথিবীর কোনো দেশ শিক্ষার্থীদের এতো বই বিতরণ করতে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিনামূল্যে এতো বই-ই দিয়েছি, প্রতিটি শিক্ষার্থী বই পেয়েছে। কেবল আমরাই এটা পেরেছি। এখন শিক্ষার প্রতিটি স্তরে বৃত্তি দেওয়া হয়, যা আগে কখনও ছিল না, এটাও আওয়ামী লীগ সরকার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলার মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সেইভাবে সম্মানিত জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় আমরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছি, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
বিএনপি-জামায়াতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশে থাকলেও মন-আত্মা পাকিস্তানে। তারাই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলেছিল। বাংলার মানুষ কখনও কোনো অন্যায়কে মেনে নেয়নি, তাদের এই অন্যায়ও টেকেনি। ২১ বছর পর সরকার গঠন করে, উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি মানুষের মুখে আল্লাহর রহমতে খাদ্য তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি। আজকে আর ক্ষুধায় কাতর হতে হয় না। বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। যারা বাকি, তাদের সবাইকে ঘর বানিয়ে দেবো। এছাড়া চিকিৎসা সেবা পাবে প্রতিটি মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন প্রমুখ।
মঞ্চে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭/আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা
এমইউএম/এসকে/আইএ/এমজেএফ