ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘লাখ লাখ মানুষ নীরবে উদ্বাস্তু হচ্ছে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
‘লাখ লাখ মানুষ নীরবে উদ্বাস্তু হচ্ছে’ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্লেনারি সেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী/ছবি: এবিএম আখতারুজ্জামান

সুইজারল্যান্ড থেকে: সুখী সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখ লাখ মানুষ নীরবে বাধ্য হচ্ছে স্থানান্তরিত (জলবায়ু উদ্বাস্তু) হতে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ড সময় সন্ধ্যায় দাভোসে কংগ্রেস সেন্টারে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্লেনারি সেশনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের অস্তিত্বের বিষয়।

বাংলাদেশ সবচেয়ে কম গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ করে অথচ আমাদেরই সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়। ল‍াখ লাখ মানুষ নীরবে বাধ্য হচ্ছে স্থানান্তরিত হতে।

বাংলাদেশের প্যারিস চুক্তি অনুসমর্থনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমৃদ্ধির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় দায়িত্ব ভাগ করে নেবে আশা করে বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তি অনুসমর্থন করেছে। স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। ২০১২ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা কার্বন নিঃসরণ সীমা অতিক্রম করবো না। আমরা কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের দিকে যাই। আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্রকে আমরা ‘গ্রিন’ প্রযুক্তিতে রূপান্তর করি।

সৌর বিদ্যুতের প্রসারে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশে সাড়ে ৪ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে। ১৫ লাখ মানুষ এখন সৌর বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোলার জাতি হিসেবে উঠে আসবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা করছি। চাপ সহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানি সহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌর বিদ্যুৎ ভিত্তিক সেচ পাম্প চালু করছি।

৫ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কৃষক, জেলে, কারূশিল্পী, নারীরা দিনকে দিন অধিকতার ঝুঁকিতে পড়ছে। তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার দিকে আমাদের ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, জীবন, শস্য, কৃষি, সম্পদ রক্ষায় সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও বিশ্ব বাণিজ্য করতে হবে। আমাদের প্রয়োজন উদ্ভাবন, লাভের জন্য নয়, সমস্যা সমাধানে অংশীদারিত্ব প্রয়োজন।

তৃতীয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, নবায়নযোগ্য এবং ক্লিন এর্নাজি, দক্ষ জ্বালানি প্রযুক্তি, যন্ত্র, নিরাপদ উৎপাদ, নগর সেবায় যেতে হবে।

জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অর্থায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ‘গ্রিন প্রবৃদ্ধি’ পথের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই অর্থ জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর কাছে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, স্থানান্তর, অভিযোজন উন্নয়ন, প্রযুক্তি বিনিময় আজ সমালোচিত। বুদ্ধিভিত্তিক সুরক্ষার অজুহাতে বিশ্ব সুখকর অবস্থানে থাকতে পারে না। স্বল্প উন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ প্রযুক্তি ব্যাংক রয়েছে। কৃষি-স্বাস্থ্যে আমরা জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিতে যেতে চাই।

অন্যান্যের মধ্যে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, এইচএসবিসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট গালিভার প্রমুখ।

আরও পড়ুন
***ডব্লিউইএফ-এ অংশগ্রহণ, অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ
** পানিকে বিশ্ব সম্পদ ভাবতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
** সার্ক এখনো জীবিত: প্রধানমন্ত্রী
**হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম চেয়ারম্যানের
**প্রধানমন্ত্রীকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা


বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।