ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা ঢাকতে দুঃসাহস দেখানো হচ্ছে’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা ঢাকতে দুঃসাহস দেখানো হচ্ছে’

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির ওপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা ঢাকার জন্য বই লিখে এর দায় মুক্তিবাহিনীর ওপর চাপানোর দুঃসাহস দেখানো হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানি এক লেখকের বইয়ের প্রসঙ্গ সংসদে তুলে ধরে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে কড়া প্রতিবাদ জানানোরও দাবি জানান তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, আজ একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, সেখানে বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে একটা আলোচনা হয়েছিল। সেখানে দেখলাম পাকিস্তানের জুনায়েদ আহমদের লেখা ‘ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’ বইটার মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, ৩০ লাখ শহিদ; সব কিছুর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে। বইটি পাঠিয়েছে আইএসআই। সেই বই পাকিস্তানস্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠিয়েছে ওদের ডাইরেক্টর জেনারেল অব ইনটেলিজেন্স আমজাদ ইকবাল বাদল।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজ নিন্দা জানানোর জন্য সংসদে দাঁড়িয়েছি। বইয়ে ৩০ লাখ শহিদ, এক কোটি লোক গৃহহারা, ৫ লাখ মা-বোন লাঞ্ছিত; এসব ঘটনা একটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে লেখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের একটা ঐতিহাসিক ছবি আছে। যে ছবি বিশ্বব্যাপী পত্র-পত্রিকায় লেখা আছে, ‘ম্যাসাকার অব পাকিস্তানি আর্মি’। রিক্সার পশে রিক্সাওয়ালার ছবি পরে আছে। সেই একই ছবিটাকে তারা ক্যাপশন করেছে, ‘ম্যাসাকার অব অর্ডিনারি সিভিলিয়ান্স বাই মুক্তিবাহিনী ইন ১৯৭১’। আবার একটা লিখেছে যেখানে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করেছে হাজার  হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে। অর্থাৎ মুক্তিবাহিনীকে বিরূপভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
 
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তোফায়েল বলেন, আপনি এখানে আছেন। একটা প্রস্তাব রাখতে চাই, যেহেতু ওরা বিরূপ প্রচার প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, সেজন্য ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আমাদের চিহ্নিত করা উচিত। প্রতিবছর ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করব। এই প্রস্তাবটা সংসদে রাখতে চাই।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তানের আইএস ওদের সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান, অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ওদের কত বড় সাহস, দুঃসাহস বিরূপ একটা বই লেখে, সেটা আবার আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে... করাচিতে আমাদের হাইকমিশনে পাঠিয়েছে। এজন্য সংসদ থেকে নিন্দা জ্ঞাপন করি। বইটা আমাদের বাতিল করার কিছু নাই, ওটা পকিস্তানের বই। তবে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটা জোরালো প্রতিবাদ করতে পারে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদ জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সেই ৩০ লাখ শহিদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই বইয়ের সাথে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের হুবহু মিল আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এসএম/এসকে/আরআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।