ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নবীগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গোলাপের বিরুদ্ধে তদন্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
নবীগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গোলাপের বিরুদ্ধে তদন্ত আবুল খায়ের গোলাপ

হবিগঞ্জ: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে তদন্ত করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত দল।

গোলাপ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা।

মঙ্গলবার (২৩ মে) সারাদিন এএসপি নুর হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত দলটি মামলা তদন্তের স্বার্থে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

এ সময় তারা গোলাপের এলাকার বিভিন্ন লোকজনের সাক্ষ্য নেন। গোলাপ যে স্কুলে লেখাপড়া করেছেন, সে স্কুলে গিয়ে তার বয়স যাচাই ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

তদন্ত দলের প্রধান এএসপি নুর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আগামী ২০ জুন ধার্য দিনে ট্রাইব্যুনালে মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরা হবে। তদন্ত সঠিকভাবে এগিয়ে চলেছে। পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত বছরের ২৩ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন গজনাইপুর ইউনিয়নের লোগাঁও গ্রামের রইছ উল্লার মেয়ে বীরাঙ্গনা সুকুরী বিবি (৬৫)।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর বিকেলে গোলাপের পরিকল্পনা ও পরামর্শে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সুকুরী বিবির বাড়িতে হানা দেয়। ওই সময় সুকুরী বিবি পালাতে চাইলে গোলাপ তাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে ধরিয়ে দেন। পরে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে গোলাপও তাকে ধর্ষণ করেন।

এছাড়া, ১৯৭১ সালে স্থানীয় মেয়েদের পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে তুলে দেওয়া, অন্তত ২০টি হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, লুটপাটসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গোলাপের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৯ অক্টোবর অন্য একটি মামলা করেন গেদু মিয়া নামে এক ব্যক্তি। তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর কান্দিগাঁও মহাসড়ক সংলগ্ন রাস্তার পাশে গাড়ি চাপা দিয়ে গেদু মিয়াকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

পরে বাবা হত্যার অভিযোগে গেদু মিয়ার ছেলে রাজু আহমেদ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন।

২০১৫ সালের ১৭ জুলাই গজনাইপুর ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে একই উপজেলার নিশাকুড়ি গ্রামের আছকির উল্লার ছেলে মো. মানিক মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোক্তাদির হোসেন দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি গোলাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গোলাপ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। পরে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল এলাকায় এসে তদন্ত করেন। সর্বশেষ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে গত ১১ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
এসআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।