অচীরেই তাড়াইলবাসীর সেই ইচ্ছা সফল হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, তাড়াইল আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সকালে তাড়াইল উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে ঘুরে এবং কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য তাড়াইল সফরকেই পাওয়া যায় টক অব দ্যা টাউন হিসেবে। রাষ্ট্রপতি তাড়াইল আসবেন, এতে ভীষণ খুশি স্থানীয় লোকজন। রাষ্ট্রপতির জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন প্রতিটি তাড়াইলবাসী।
কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়মিত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে দেখা-সাক্ষাত করেন, এমন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা রাষ্ট্রপতির তাড়াইল আগমনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাষ্ট্রপতি প্রকৃতই একজন গণমানুষের নেতা। মানুষের সঙ্গে মিশতে তিনি পছন্দ করেন। তাঁর আমলে যত মানুষ বঙ্গভবনে সাক্ষাতের জন্য গেছেন, অতীতে কোনও রাষ্ট্রপতির সময়কালে এতো মানুষের আগমন হয় নি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সময়-সুযোগ পেলেই নিজের নির্বাচনী এলাকার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। হাওরের বন্যা ও পাহাড়ি ঢলজনিত পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছেন। সরেজমিনে উপদ্রুত এলাকায় সফরও করেছেন তিনি। তাড়াইল আগমনের মাধ্যমে তিনি হাওর-সংলগ্ন নিজের সাবেক নির্বাচনী এলাকার খোঁজ-খবর নেবেন। এ সফরের সময় তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্র কিশোরগঞ্জ শহরও ঘুরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে তাঁরা জানান।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের তাড়াইল সফরের ফলে স্থানীয় শিক্ষা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতিবেগ আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা আবুল হাশেম।
তিনি বলেন, তাঁর সফরের মাধ্যমে অবহেলিত ও পশ্চাৎপদ তাড়াইলের মানুষের মধ্যে প্রাণাবেগ সৃষ্টি হবে।
গণতন্ত্রী পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন বলেন, রাষ্ট্রপতি সবার সামনে একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান স্বরূপ। তাড়াইলে তাঁর আগমনের কথা জেনে আমরা আনন্দিত ও আশাবাদী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, তাড়াইল-করিমগঞ্জ নির্বাচনী আসনে বর্তমানে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রয়েছেন। বহু বছর এই আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া। রাষ্ট্রপতির সফরের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সূচনা হওয়ার ফলে আওয়ামী লীগ এই আসনটি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবে।
আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করার জন্য বেশ কয়েকজন যোগ্য প্রার্থী ভোটের মাঠে তৎপর রয়েছেন। এদের মধ্যে সাবেক এমপি ড. মিজানুল হক এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মাহবুব ইকবাল অন্যতম।
তিনি বলেন, এই আসনের বিএনপি প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক একাত্তরে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের সঙ্গে মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশত্যাগ করে আমেরিকায় পাড়ি জমান। এলাকা ছেড়ে তাঁর চলে যাওয়ার ঘটনা দলের ভাবমূর্তি ও শক্তি ক্ষুণ্ন করেছে। ফলে আওয়ামী লীগের সামনে আসনটি পুনরুদ্ধার করার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তাড়াইলের বেশ কয়েকজন নেতাও মনে করেন যে, রাষ্ট্রপতির সফর তাড়াইলের রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করবে। বিশেষত, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক গতিবেগ ও শক্তি বৃদ্ধিতে এই সফর নৈতিক বল যোগাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
জেডএম/