ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ বাসায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৭
মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ বাসায় বাসায় রাখা শোকবইয়ে স্বাক্ষর করছেন আত্মীয়-স্বজন ও সর্বস্তরের মানুষ। ছবি: সাব্বির আহমেদ/ বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর বনানীর বাসায় আনা হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ।

শনিবার  (০২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮০ নম্বর বাসায় পৌঁছে। লন্ডন থেকে বিমানে মরদেহ নিয়ে সঙ্গে এসেছেন আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ছেলে নাভিদুল হক ও নাতনি।

মেয়র আনিসুল হকের বাবা ৯০ বছর বয়সী সৈয়দ মাঈনুদ্দীন হোসাইন তার ছোট ভাই সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের বাসায় র‌য়ে‌ছেন। তা‌কে এখনও ছে‌লের মৃত্যুর খবর‌টি জানানো হয়নি। মেয়রের মা ফাতেমা জোহুরা বেগম মারা গেছেন অনেক আগেই।

সকাল থে‌কেই মেয়রের বাসায় ভিড় করে আছেন আত্মীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা। বাসার‌ ভেত‌রে আপন আত্মীয়রা এবং বা‌কিরা বাসার বাই‌রে অবস্থান কর‌ছেন।

বাসার গে‌টে রাখা শোকবইয়ে স্বাক্ষর করছেন সর্বস্তরের মানুষ।

প্রথ‌মেই আত্মীয়-স্বজনদের তার মরদেহ দেখার সু‌যোগ দেওয়া হ‌বে।

এর আগে ১২টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০০২ ফ্লাইটযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ পৌঁছানোর পর সরাসরি মেয়রের বাসায় নেওয়া হয়।

মেয়রের মরদেহ বিমান থেকে নামিয়ে মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটে আনা হয়। সেখানে মেয়রের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা।

বিকেল ৩টায় আর্মি স্টেডিয়ামে আনিসুল হককে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন সাধারণ মানুষসহ সর্বস্তরের বিশিষ্ট নাগরিকেরা।

শ্রদ্ধা অর্পণ শেষে সেখানেই বাদ আসর নামাজে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে জনপ্রিয় এই ব্যক্তিত্বকে।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন আনিসুল হক। হাসপাতালে তিনি কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস (ভেন্টিলেশন) যন্ত্র দেওয়া অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র খুলে নিয়ে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) বাদ জুমা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
 
আনিসুল হক দীর্ঘ দুই মাস ধরে মস্তিকের রক্তনালীতে প্রদাহজনিত রোগে ভুগছিলেন।  

গত ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। গত ১৩ আগস্ট লন্ডনের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে হাসপাতালে চেকআপ করাতে যান। চেকআপ শেষে বাসায় ফিরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ডাক্তারি ভাষায় একে ‘মাইল্ড ব্রেইন স্ট্রোক’ বলা হয়।

পরে তাকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিস্কের প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকেরা।

এরপর থেকে মেয়র আনিসুলকে ওয়েলিংটন হাসপাতালের হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটলে তাকে গত ৩১ অক্টোবর আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।

গত রোববার (২৬ নভেম্বর) শরীরে নতুন করে ইনফেকশন দেখা দেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে ফের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

শারীরিক অবস্থার আরও কিছুটা অবনতি হলে পরে আনিসুল হককে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

৬৫ বছর বয়সী আনিসুল হক বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান। তৈরি পোশাকখাতের এই ব্যবসায়ী এক সময় এই খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ছিলেন। এছাড়া ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
২০১১ সালের ০১ ডিসেম্বর গঠিত হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৭
এসএ/এমএসি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।