এই উপলক্ষে বাঘা উপজেলা হলরুমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তেলবাহী ট্রেন রক্ষাকারী শিশু শিহাব ও লিটনকে পুরস্কার হিসেবে নগদ পাঁচ হাজার টাকা, সম্মাননা ক্রেস্ট ও শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়, কম্বল ও উপহার হিসেবে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন রেজা। প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোবায়ের হোসেন, রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল মোহসী, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম, আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহীদ, আড়ানী স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন, বাঘা প্রেসক্লাব সভাপতি আবদুল লতিফ মিঞা, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক আমানুল হক আমান, গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন, ইঞ্জিনিয়ার আখতার রহমান প্রমুখ।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে আড়ানী স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবির পাশাপাশি ট্রেন রক্ষাকারী শিশু শিহাব ও লিটনকে আজীবন ট্রেন ভ্রমণের টিকিট ফ্রি করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও দাবি ওঠে যেহেতু দুই শিশু শিহাব ও লিটনের পরিবারের সদস্যরা রেলের জমিতে ছোট ছোট ঘর তুলে বসবাস করছে। তাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। জমি কেনা বা বাড়ি করার অর্থও নেই। সেহেতু তাদের জমির ব্যবস্থা ও ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হোক।
এর আগে ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও এই আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম দুই শিশুর লেখা-পড়ার দায়িত্ব নেন। তাদের দুজনকে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে বৃত্তির কথা জানান। এছাড়া দুই শিশুর এসএসসি পাশের পর উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থারও প্রতিশ্রুতি দেন।
এর আগে গলার লাল মাফলার দেখিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে দেয় ওই দুই শিশু। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেল স্টেশনের ৪শ’ মিটার দূরে ঝিনা রেলগেটে এই ঘটনা ঘটে। রেল লাইন ভাঙা দেখে দুই শিশু লাল মাফলার দেখিয়ে তেলবাহী ট্রেনটিকে থামিয়ে দেয়। ফলে অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় কোটি টাকার জ্বালানি তেল।
ঘটনার পর পাবনার ঈশ্বরদী থেকে মিস্ত্রী নিয়ে গিয়ে রেল লাইন মেরামত করা হয়। দুই ঘণ্টা পর বাঘা-রাজশাহী রুটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তেলবাহী ওই ট্রেনটি খুলনা থেকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে যাচ্ছিলো। সাহসী এই দুই শিশু হলো- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঝিনা গ্রামের সুমন আলীর ছেলে সিহাবুর রহমান (৬) ও শহীদুল ইসলামের ছেলে লিটন আলী (৭)।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
এসএস/আরআই