ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শীতে কাঁপছে রাজশাহী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৮
শীতে কাঁপছে রাজশাহী আগুন জ্বেলে শীত নিবারণ-ছবি-বাংলানিউজ

রাজশাহী: টানা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে উত্তরের শহর রাজশাহীর ওপর দিয়ে। দিনভর হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কুয়াশার মিশেলে হাড় কাঁপানো শীত পড়ছে। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নাকাল হয়ে পড়েছে নগরজীবনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষগুলো যারপরনাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পথের ধারে খড়কুটো জ্বালিয়ে তারা শীতের কামড় থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গাতেও একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।

কিন্তু রোববার (৭ জানুয়ারি) সেই তাপমাত্রা আরও কমে ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে।  

এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। ওইদিন রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সামান্য বেড়ে তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস জানান, আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম।  

আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ধারাবাহিকভাবেই তাপমাত্রা কমছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। তবে রাতে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে শুরু করলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।

কুয়াশায় ঢাকা রাজশাহী নগরীর চারপাশ-ছবি-বাংলানিউজকিন্তু দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই অবস্থান করবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহ জুড়ে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহী ও আশপাশের জেলার ওপর দিয়ে। এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে বলে জানান, রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এদিকে, রোববার ভোর থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী। সকাল ৯টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে তারা তীব্র ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা কম দামে গরম কাপড় কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বিভিন্ন ফুটপাতের দোকানে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আসাদুজ্জামান জানান, শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের অনেকেই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বাংলানিউজকে বলেন, বাড়তি শীত নিয়ে শঙ্কা কাটছে না এ অঞ্চলের কৃষকদেরও। জানুয়ারির শুরুতেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় বোরো বীজতলার কোল্ড ইঞ্জুরি, আলুর আর্লি ব্লাইটসহ ডাল ফসলের নানা শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে এরইমধ্যে। তবে এর জন্য কৃষকদের নিকস্থ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
এসএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।