ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘রুবী ভিলা’য় নিহত তিন জন জেএমবি সদস্য

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
‘রুবী ভিলা’য় নিহত তিন জন জেএমবি সদস্য সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান। ছবি: জিএম মুজিবুর

নাখালপাড়া (তেজগাঁও) থেকে: রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ার রুবী ভিলার ‘জঙ্গি আস্তানা’য় র‌্যাবের অভিযানে নিহত তিন জনই সন্ত্রাসী সংগঠন জেএমবির সদস্য ছিল। তারা রাজধানীতে বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছিল।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ‘রুবী ভিলা’র সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ কথা জানান র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও এমপি হোস্টেলের ঠিক পেছনে ১৩/১ ঠিকানার বাড়িটিতে ‘জঙ্গি আস্তানা’র সন্ধান পেয়ে অভিযানে নামেন র‌্যাব সদস্যরা।

সকালে অভিযান শেষ হলে পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গি আস্তানা’য় গিয়ে তিন জনের মরদেহ পাওয়া যায়।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, নিহত তিন জনই জেএমবির সদস্য ছিল। আমরা গোপন সূত্রে খবর পাই, রাজধানীতে একটি সেল গঠন করে বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে। সেই সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে এই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।

আস্তানায় দু’টি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) পাওয়ার কথা জানিয়ে র‌্যাবের এ মুখপাত্র বলেন, দু’টি পরিচয়পত্রধারীর মধ্যে একজনের নাম জাহিদ। বাড়িটির ম্যানেজার রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর এই জাহিদ রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটের এক কক্ষে ভাড়ায় ওঠে। সেই ফ্ল্যাটের ৩টি কক্ষের একটি কক্ষে থাকতো জাহিদসহ ওই তিন জন। বাকি দু’টি কক্ষে থাকতেন আরও চার জন।

যখন বাসা ভাড়া নেয়, তখন জাহিদ ম্যানেজার রুবেলকে বলে যে, তার সঙ্গে দুই ভাই থাকবে। সে কারখানায় কাজ করে। ২ হাজার টাকা প্রাথমিকভাবে দিয়ে বাসায় উঠলেও মাসিক ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল ৫ হাজার ৫শ’ টাকা। রুবী ভিলার ফটক।  ছবি: মফিজুল সাদিকওই ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জাহিদ ভোরে বের হয়ে যেতো, রাতে ফিরতো। বাকি দু’জন বাসায় থাকতো, তাদের কেউ বের হতে দেখেনি। ফ্ল্যাটের চুলার গ্যাস পুরোপুরি জ্বালিয়ে সেখানে গ্রেনেড রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু আমরা এ ধরনের পরিকল্পনা ঠেকাতে পেরেছি। ভবনটির বাকি ৬০ জনই নিরাপদ আছেন। ভবনটিও পুরোপুরি নিরাপদ বলা যায়। তবে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অভিযানের পর ঘটনাস্থল থেকে তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট, মরদেহের পাশে দু’টি পিস্তল, অবিস্ফোরিত তিনটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), ১৪টি ডেটোনেটর, চারটি পাওয়ার জেল, অন্যান্য বিস্ফোরক ও কিছু বাল্ব পাওয়া গেছে।  

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, অভিযান শুরুর আগে সব বাসিন্দাকে ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এর আগেও ‘রুবী ভিলা’য় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে র‌্যাব এই বাড়িতে অভিযান চালায়। তখন সরকারবিরোধী আন্দোলন ও নাশকতার পরিকল্পনা জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। রুবী ভিলায় এ নিয়ে তৃতীয় অভিযান চালানো হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮/আপডেট ১৫১০ ঘণ্টা
এমআইএস/এজেডএস/এসজেএ/পিএম/এইচএ/

** ‘রুবী ভিলা’য় ২০১৬ সালে আটক হয় ৩ জামায়াতকর্মী
** গ্রেনেড বিস্ফোরণে গোটা ভবন ধসানোর চেষ্টা করে জঙ্গিরা!
** ‘রুবী ভিলা’র আস্তানায় ৩ জঙ্গির মরদেহ: র‌্যাব ডিজি
** নাখালপাড়ার আস্তানায় ‘কয়েকজন’ জঙ্গি নিহত
** নাখালপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।