নুরুল ইসলাম ওরফে নুরী বনানীর এমএস মুন্সি ওভারসিজ (জনশক্তি রপ্তানি) প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিক হোসেন মুন্সী (৫০) হত্যা মামলারও আসামি।
** মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় গুলি করে হত্যা বন্ধুকে
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী নুরী পলাতক ছিলো।
গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রকাশ্যে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার মাছ বাজার এলাকায় আবুল বাসার বাদশাকে গুলি করে পালানোর সময় নুরীকে ধরে ফেলে জনতা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে গুলিবিদ্ধ বাদশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. শাজাহান সাজু বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেফতার হওয়া নুরুল ইসলাম বনানীর এমএস মুন্সি ওভারসিজ (জনশক্তি রপ্তানী) প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিক হোসেন মুন্সী হত্যা মামলার আসামি।
তিনি বলেন, সিদ্দিক মুন্সি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান শ্যুটার ছিলো এ নুরুল ইসলাম। হত্যার পর থেকেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিলো। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়।
অর্থ লেনদেনের বিরোধের জেরেই বাদশাকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরী স্বীকার করেছে। -যোগ করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
নিহত বাদশা মৌচাকে একটি কাপড়ে দোকানে চাকরি করতো এবং তার স্ত্রী শিউলী আক্তার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে। এক সময় তারা টঙ্গীর গাজিপুরায় থাকতো। বাদশা সেখানে একটি মাদক মামলায় জেল খেটেছিলো। পরে বাড্ডার মেরুল আনন্দ নগরে একটি টিনশেড বাসায় ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে।
নিহত বাদশার স্ত্রী শিউলী আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরের দিকে চার যুবক বাদশাকে ডেকে নিয়ে মেরুল মাছ বাজারের সামনে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। আগে বাদশা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। বাড্ডা এলাকার নরুল ইসলাম নামে বাদশার এক বন্ধু তাকে মাদক বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছিলো।
ব্যবসা করতে রাজি না হওয়া নরুল ইসলামসহ তার লোকজন বাদশাকে গুলি করে হত্যা করে। -অভিযোগ শিউলীর।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, নিহত বাদশা পুলিশ সোর্স হিসেবে কাজ করতেন কি না বিষয়টি জানা নেই। ঘটনার সময় অস্ত্রসহ নরুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। বাকি তিন সহযোগীকে আটকের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর রাতে বনানীর ৪ নম্বর রোডের ব্লক-বি’র ১১৩ নম্বর ভবনের এমএস মুন্সি ওভারসিজ (জনশক্তি রপ্তানী) অফিসে ঢুকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সিদ্দিক হোসেন মুন্সীকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানের ৩ কর্মকর্তা মির্জা পারভেজ, মোখলেসুর রহমান ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। আহতদের গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে সিদ্দিক হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বানানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর ভোরে বাড্ডার আফতাবনগর এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিদ্দিক মুন্সি হত্যাকাণ্ডের জড়িত দুই আসামি সাদ্দাম হোসেন (২৫) ও আলামিন ওরফে পিচ্চি আলামিন (৩২) নিহত হয়।
এর আগে, হত্যাকাণ্ডে অস্ত্র সরবরাহকারী ও পরিকল্পনাকারী হেলাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এসজেএ/জিপি