এমনসব কান্নামিশ্রিত কথার চিৎকারে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার মির্জা টাওয়ার স্তব্ধ হয়ে আছে! ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে নিহত অরুনীমা বিশ্বাসের মেয়ে প্রাপ্তির এসব কথার জবাব জানা ছিল না সেখানে উপস্থিত মানুষদের।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বাড়ির সামনে অরুনীমার মরদেহ এসে পৌঁছায়।
প্রাপ্তি মায়ের বিভিন্ন স্মৃতির বিবরণ দিতে দিতে ডিসির কোলে মাথা রেখে কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছিলেন। মায়ের কেন এমন মৃত্যু হলো? কেন ৫ দিনেও এর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ? কে দেখবে এইচএসসি শেষ করা প্রাপ্তি ও ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট ভাই প্রত্যয়কে? এসব বলে কাঁদছিলেন প্রাপ্তি।
এমন প্রশ্নের সামনে চোখের জল আঁটকে রাখতে পারলেন না জেলা প্রশাসক। অঝোরে কাঁদলেন তিনিও, কাঁদালেন উপস্থিত সব মানুষকে। প্রাপ্তিকে বুকে জড়িয়ে ধরে আশ্বাস দিলেন, ইনশাআল্লাহ বিচার হবেই। ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে স্বজনদের পাশাপাশি চিকিৎসক স্বামীর শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহকর্মীরাও বাড়িতে ভিড় করেছিলেন। এসেছিলেন প্রাপ্তির কলেজের বন্ধুরা। সবাই সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে দুই ছিনতাইকারী রিকশায় থাকা অরুনীমার ব্যাগ ধরে হেঁচকা টান দিলে তিনি পড়ে গিয়ে গুরুত্বর আহত হন।
সেখান থেকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলজে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন দুপুর পৌনে ১২ দিকে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
র্দীঘ ৫ দিন রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
অরুনীমা বিশ্বাস ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের স্ত্রী এবং দুই সন্তানরে জননী।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি ক্লোজড
বাংলাদেশে সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
এনএইচটি/এমজেএফ