ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারি ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৮
ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারি ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫ পাথর কোয়ারিতে ধস/ফাইল ছবি

সিলেট: ভোলাগঞ্জ কোয়ারি ধসে নিখোঁজ মঈন উদ্দিন (৩০) নামে আরো এক শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে পাথর কোয়ারি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মঈন উদ্দিন সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার কলেরচর গ্রামের মৃত রইছ উদ্দিনের ছেলে।

তিনি ভোলাগঞ্জ কোয়ারি সংলগ্ন এলাকায় অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে একটি বস্তিতে বসবাস করতেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল লাইছের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ দিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে কোয়ারি ধসের পর মতিউর রহমান (৩০) ও রুহুলের (২২) মরদেহ ও তিন জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

নিহত মতিউর রহমান সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে এবং রুহুল একই এলাকার আসকর আলীর ছেলে।

সোমবার সকাল ১১টায় নিখোঁজ আতাবুর (৪৫) ও আশিসের (৩৮) নামে আরো দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আতাবুর সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ও আশিস একই এলাকার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।

এছাড়া রাতে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মলিকপুরের মকসুদ আলীর ছেলে রকিবুল, তেরাব আলীর ছেলে ফিরোজ আলী ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আক্তারপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে রুহুলকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এরআগে রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে ভোলাগঞ্জ কালাইরাগ এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী আমজাদ ও তার সহযোগীদের মালিকানাধীন কোয়ারিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার পর কোয়ারির শ্রমিকদের সর্দার আব্দুর রউফকে (৫০) আটক করেছে পুলিশ। আটক আব্দুর রউফ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার সময় কোয়ারিতে ৬/৭ জন শ্রমিক জেনারেটর চালিয়ে পাথর উত্তোলনের সময় মাটি চাপা পড়েন। তাৎক্ষণিক দুই জনের মরদেহ ও তিন জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দু’টি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এবং কোয়ারি সর্দারকে আটক করে পুলিশ।

স্থানীয়রা আরো জানান, কোয়ারিতে প্রায় ৫০ ফুট গভীর গর্ত থেকে শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন। কিন্তু কোয়ারির তীরের মাটি নরম থাকায় ধসে পড়ে চাপা পড়েন তারা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আমজাদ হোসেন ছাড়াও উপজেলার দক্ষিণ কোনাবাড়ির কালা মিয়া, মাসুক মিয়া, তানভীর আহমদ কনাই, কালাইরাগের ফয়জুর ও কালীবাড়ির আলাউদ্দিন ওরফে মরা আলাউদ্দিন ওই কোয়ারির যৌথ মালিক বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে পুলিশ বলছে কোয়ারি মালিকদের নাম এখনো পাওয়া যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে যাদের নাম আসবে তারাই মামলায় অভিযুক্ত হবেন।

এদিকে, চার জনের মরদেহ উদ্ধারের পর মঈন উদ্দিন নিখোঁজ ছিলেন। কোয়ারিতে সন্ধান চালিয়ে বিকেলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জৈন্তপুর উপজেলা শ্রীপুরে কোয়ারি ধসে দেলোয়ার হোসেন (২৬) নামে আরো এক শ্রমিক নিহত হন। তিনি উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৮/আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা
এনইউ/আরআইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।