শুক্রবার (১১ মে) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ গঠন করে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
‘সত্তুরের নির্বাচনে ঘরে ঘরে ঘুরে ছাত্রলীগ ভোট চেয়েছে। আমিও ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে আমিও অংশ নিয়েছি। আমাদের বহু সহকর্মী জীবন দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। মার্শাল ল’ যারা জারি করেছিল তাদের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করেছে ছাত্রলীগ। ’
জিয়াউর রহমানের সময়ে ছাত্র সমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছিলেন। এককভাবে মানুষের ভোট কেড়ে নিয়ে যায় তারা। নিজেকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। সেখানেও যে আন্দোলন হয়েছিল তাতে ছাত্রলীগের অবদান ছিল।
‘আন্দোলনের এক পর্যায়ে ওই বছরের ২৩ মার্চ বিদায় নেন খালেদা জিয়া। এরপর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা জয়ী হই। কিন্তু পরে ২০০১ সালে সবাইকে অত্যাচার করেছে বিএনপি-জামাত জোট। তারা বাংলা ভাই সষ্টি করে, দেশজুড়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। এমনকি পরে আমাকেও গ্রেফতার করা হয়। ওই সময়ও ছাত্রলীগ আন্দোলন করেছে প্রতিবাদ করেছে। ’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা যে দলেরই হোক তাদের কেউ ছাড় পাবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি যারাই বিশঙ্খলা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।
আর কাউন্সিলে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় অন্যান্য দলে যোগ নেওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের অনেক নেতা নেতাই এখন বিএনপিতে। এরা বেইমান, মোনাফেক এবং আদর্শচ্যুত।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী সরকারের দুই আমলে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি কথা দিয়েছিলাম যু্দ্ধাপরাধের বিচার করবো সেটা করছি। এই যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে খালেদা জিয়া আমার লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা তুলে দিয়েছিল। আমরা সেই যুদ্ধাপরাপধীদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছি।
‘বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি, সবার দোরগোড়ায় শিক্ষা পৌঁছে গেছে। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। এই দেশে কেউ গৃহহারা থাকবে না। বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। পাশাপাশি তারা যাতে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে সেজন্যও চেষ্টা চলছে। ’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের মডেল। বিশ্ববাসী এ উন্নতিতে বিস্মিত। কিন্তু আমাদের কাছে এখন তা বাস্তব। আমাদের দেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিও এখন বাস্তব। ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে প্রতিটি ইউনিয়নে।
এ সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ছাড়াও ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৮/আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা
এমএ/