ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসিং গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসিং গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ হাইকোর্টের ফাইল ফটো

ঢাকা: চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন তৈরিতে স্বাধীন কমিশন গঠনের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
 
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহআল মাহমুদ বাশার।
 
রুলে সরকারি ডাক্তারদের অফিস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ধারাটি কেন অসাংবিধানিক, বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
 
আদেশের পরে আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন,  দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ এর ৪ ধারায় বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মরত কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক অফিস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট মেডিকেল এ প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।
 
‘এটা দেখে মনে হচ্ছে একটি ভালো নিয়ম। কিন্তু এ ধারার মাধ্যমে তাদের মূলত প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এ ধারা নিয়ে আদালত রুল জারি করেছেন। রুলে এ ধারাটি কেন বাতিল ও অসাংবিধানিক করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ’
 
তিনি জানান, সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের জন্য হাইকোর্ট একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন তৈরিতে স্বাধীন কমিশন গঠনের আদেশ দিয়েছেন।
 
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি।
 
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ এর ৪ ধারায় সরকারি ডাক্তারদের ডিউটি আওয়ারের পরে প্র্যাকটিসের একটি বিধান ছিলো। এ বিধানটি কেন সংবিধানের ৩২ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না এ জন্য রুল জারি করেছেন। এছাড়া একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশনের মাধ্যমে, সেখানে অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞরা থাকবেন, সে কমিশন সব ডাক্তারদের জন্য একটি কমপ্লিট প্র্যাকটিসিং গাইডলাইন প্রণয়ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
গত ০৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী এ রিট আবেদন করেন। আইনজীবীরা হলেন- আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সালাহ উদ্দিন রিগ্যান, সুজাদ মিয়া, আমিনুল হক ও  কাউছার উদ্দিন মন্ডল।

রিট আবেদনে রুল জারির পাশাপাশি চিকিৎসকদের জন্য একটি গাইডলাইন করতে বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিলো।

এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ডাক্তার ব্যক্তিগত চেম্বারে, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চিকিৎসা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সম্প্রতি নিজ কর্মস্থল সরকারি হাসপাতাল রেখে অনেক ডাক্তার তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফলে রোগীরা সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত কর্মঘণ্টা চলাকালে সরকারি ডাক্তারদের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করা শুধুই পেশাগত অসদাচরণই নয়, আইনের দৃষ্টিতেও এটা অপরাধ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।