রোববার (৭ এপ্রিল) দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি চলায় কার্যত অচল ছিল বিদ্যালয়টি।
শিক্ষকরা জানান, চারিত্রিক স্খলন, আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সৈয়দ করিমের পূর্ণ বেতন দিয়ে বিল প্রস্তাব না করায়, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও এতদিন অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বিলেও সই করেননি।
তারা জানান, তিনমাস ধরে বেতনের সরকারী অংশ বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষক অর্থ সংকটে পড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে এসব শিক্ষকদের পয়লা বৈশাখের বোনাস পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে নিরুপায় হয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
শুধু সরকারী অংশ নয়, বেতনের বেসরকারি অংশও এতদিন বন্ধ ছিল। গত উপজেলা নির্বাচনের আগে অনেক দেন-দরবারের পর একসঙ্গে দু’মাসের (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি অংশ পেয়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন বাংলানিউজকে জানান, চারিত্রিক স্খলন, আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সৈয়দ করিম অর্ধেক বেতন পেয়ে আসছিল। কিন্তু আগের বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কথা বলে আমাকে পূর্ণ বেতনে বিল প্রস্তাব করার জন্য বলেন। কিন্তু বহিষ্কারাদেশের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় ইউএনও আমাকে পর পর তিনবার আদেশ এবং আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ্এরপরও আমি পূর্ণ বেতনে বিল প্রস্তাব করিনি। যে কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীর বেতনেও স্বাক্ষর না করায় তিনমাস বেতনের সরকারী অংশ আটকে যায়।
তিনি বলেন,এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকেরা কর্মবিরতি শুরু করলে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি এবং ছাত্রীদের লেখাপড়ার বিষয়টি চিন্তা করে অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের পূর্ণ বেতনে বিল করে দিয়েছি। ফলে বকেয়াসহ অন্যান্য শিক্ষকের বিলে সই করে দিয়েছেন ইউএনও। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন পেতে আর কোনো বাধা নেই।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. লুৎফুর রহমান শিক্ষকদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক সৈয়দ করিমকে পূর্ণ বেতন দেওয়ার জন্য উচ্চ আদালত একটি নির্দেশনা পেয়েছি। এ নির্দেশনার বিষয়ে জিপির (গভরমেন্ট প্লিডার) মতামতও নিয়েছি। জিপিও আমাকে হাইকোর্টের নিরর্দেশনার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। সে কারণে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে পূর্ণ বেতনে বিল করার জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হয় এবং সেই নির্দেশনার আলোকে পূর্ণ বেতনে বিল করা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই শিক্ষকেরা বেতন পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৯
এসবি/জেইউ/টিসি