প্রতিদিন বিকেলে দুস্থ, অসহায় ও গরিব এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করেন কয়েকজন বৌদ্ধ ভিক্ষু। এ ইফতার বিতরণের মধ্য দিয়ে তারা বোঝাতে চান, ধর্মের ভেদাভেদ নয়, মানুষের ভেদাভেদও নয়, মানুষের সেবা দিয়েই ঈশ্বরের সেবা মেলে।
শনিবার (১১ মে) সবুজবাগের বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, ইফতারের আগে মূল ফটকের বাইরে এসে জড়ো হন রোজাদারেরা। বিকেল ৫টার পর খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের গেইট। পরে মূল ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু অপেক্ষমান মানুষদের হাতে তুলে দেন একটি করে টোকেন। সেই টোকেন নিয়ে মন্দিরের ভেতরে খোলা জায়গায় সারি বেঁধে দাঁড়ান সবাই। শুরুর দিকে ইফতার নিতে আসা মানুষের সংখ্যা এক-দেড়শ থাকলেও শেষ সময়ে এ সংখ্যা প্রায় পাঁচশ ছাড়িয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে রোজাদার ও দুস্থ মানুষের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করে আসছে এ বিহার। প্রতিদিন প্রায় ২০০ রোজাদার ও দুস্থ মানুষ এখান থেকে ইফতারি সংগ্রহ করে।
বিহারে ইফতার নিতে আসা রিকশা চালক খলিল আলী বলেন, বিকেলে এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় এখান থেকে ইফতার সংগ্রহ করি। আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য এটা খুবই উপকারী আর তাদের জন্যও সওয়াবের কাজ। বৌদ্ধরা দিচ্ছে বলে ইফতারি নেওয়া যাবে না, আমরা এ নীতি মানি না। কেন না তারা এগুলো ভালোবেসে ও ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দিচ্ছেন।
ইফতার বিতরণ প্রসঙ্গে মন্দিরের ধর্মরাজিক বিভুতি ভিক্ষু বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় আট থেকে নয় বছর ধরে আমরা ইফতারি বিতরণ করছি। আমরা মনে করি, সবার আগে মানুষ। তারপর ধর্ম। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যাই হোক না কেন আমরা সবার আগে বাংলাদেশি। আর ধর্মের কাজ মানুষের সেবা করা। আমরা নানাভাবে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করি। প্রতিদিন বিকেলে এখানে শত শত মানুষ আসে। যারা আসে, তাদের ইফতারি দেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৯
এইচএমএস/আরআইএস/