বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিবেশ অধিদপ্তর (ডিওই) এবং এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) আয়োজিত ‘স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর পারদযুক্ত পণ্যের ক্ষতিকর প্রভাব’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেন বিশিষ্টজনরা।
কর্মশালায় বলা হয়, পারদ পণ্য ব্যবহারের ফলে যে বিষাক্ততার সৃষ্টি হচ্ছে, তা বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবেক সচিব মার্গুব মোর্শেদ বলেন, পারদ আমাদের দেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর ব্যবহার থেকে আমরা বিরত থাকবো। পাশাপাশি অন্যদের আমরা সচেতন করবো। পারদের ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে এবং সরকারকেই এর সমাধান দিতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে উৎপাদনকারীকে। তারা যখন পণ্য উৎপাদন করেন তখন এর ক্ষতিকর দিক নিয়েও তাদের ভাবা উচিৎ। অনুষ্ঠানে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান বলেন, রাসায়নিকের কারণে বৈশ্বিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি। প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার এত বেড়েছে যে, সমুদ্রে মাইলের পর মাইল প্লাস্টিক পড়ে থাকতে দেখা যায়। এগুলো মাছের মাধ্যমে বা অন্য কেমিক্যালের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। আবার আমাদের দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মেয়ে ত্বক ফর্সাকারী পারদ মিশ্রিত ক্রিম ব্যবহার করছেন, তাদের সতর্ক করতে হবে। আবার যারা উৎপাদন করছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ বলেন, লাভের জন্য মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিকর ক্রিম বিক্রি করছেন। লাভের জন্য অন্যের ক্ষতি করবো এই মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া উচিত। সবাই মিলে অন্যদের সচেতন করতে হবে।
আবুল হাশেম বলেন, সৌন্দর্যের জন্য পণ্যগুলো ভালো বলে বিক্রি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো ভালো না। আমাদের মেয়েরা স্কিন কুচকিয়ে যাবে বলে একধরনের এন্টি এগনিক পণ্য ব্যবহার করে, যা ধীরে ধীরে তাদের লিভার ও কিডনিকে ড্যামেজ করে দিচ্ছে। আবার ছেলেরা সেভিং ক্রিম ব্যবহার করছেন, চুলে কালার করছেন, এখানেও ক্ষতিকর পণ্য মিশ্রিত হয়। সবচেয়ে ভালো হয় কাঁচা হলুদের ব্যবহার, এতে ত্বক উজ্জ্বল হয়, ত্বকের কোনো সমস্যা তৈরি হয় না।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন পণ্যের। ছেলেরা চাচ্ছেন ফর্সা মেয়ে আর মেয়েরা বিজ্ঞাপন দেখে ওই পণ্য ব্যবহার করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। একইসঙ্গে বিজ্ঞাপনে ভালোর কথা বলার সঙ্গে এর ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করা দরকার।
ড. শাহরিয়ার হোসেনের সভাপত্বিতে আয়োজিত কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন- বুয়েটের অধ্যাপক ড. শওকত, এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা, প্রজেক্ট ডিরেক্টর মাসুদ ইকবাল শামীম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
ইএআর/আরবি/