ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মোহাম্মদপুরে সংঘর্ষ, পুলিশের গাড়িতে আগুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৯
মোহাম্মদপুরে সংঘর্ষ, পুলিশের গাড়িতে আগুন সংঘর্ষে আহত রকি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিহারি ক্যাম্পে ৩১ কোটি টাকা বিদ্যুৎবিল বকেয়া থাকায় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে তাদের উপর চড়াও হন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে বিহারিরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পের ৩১ কোটি টাকা বিদ্যুৎবিল বকেয়া থাকায় ডিপিডিসির লোকজন জেনেভা ক্যাম্পে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান। এ সময় তাদের ওপর হামলা চালায় বিহারিরা। এক পর্যায়ে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের ওপরও হামলা করে তারা। বিহারিরা থানার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্র জানা যায়, ঢামেক হাসপাতালে জেনেভা ক্যাম্পের সংঘর্ষের ঘটনায় রকি (২২) নামে এক যুবক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। তিনি জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার চোখে শটগানের গুলি লেগেছে।

উর্দুভাষী যুব-ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ জুয়েল বলেন, বকেয়া বিলের কারণে ডিপিডিসি গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে লোডশেডিংয়ের নাম করে জেনেভা ক্যাম্পে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখত। জেনেভা ক্যাম্পের প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার বাসিন্দা এ কারণে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতো। বারবার ডিপিডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা জানান, আমাদের কিছু করার নেই। বকেয়া বিল পরিশোধ করতে হবে, না হলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে দুর্বিষহ জীবনযাপন করে যাচ্ছিলেন জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এর প্রতিবাদে দুপুরের দিকে মোহাম্মদপুর হুমায়ুন রোড ও শাহজাহান রোডে জেনেভা ক্যাম্পাসে বাসিন্দারা অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান। তিনি বিহারিদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি চলে যাওয়ার পরপরই তাদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বিহারি ক্যাম্পের অন্তত ১০০ জন আহত হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুৎবিল সরকার পরিশোধ করে থাকে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। মন্ত্রণালয় কেন পরিশোধ করছে না, এই ব্যাপারে আমাদের সংগঠন এফপিডিআরপি ও এমআরটিএম থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের আরেকটি সংগঠন ইউএসপিওয়াইআরএম থেকেও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় কারা পুলিশের গাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে, সেই বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেনি।

এদিকে তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি আনিসুর রহমান জানান, এখন জেনেভা ক্যাম্পের আশেপাশে পরিস্থিতি শান্ত আছে। রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। তবে জেনেভা ক্যাম্পের আশেপাশে পুলিশ অবস্থান করছে।



বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯/আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা
এজেডএস/আরআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।