ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শাজাহান খানকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ইলিয়াস কাঞ্চনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
শাজাহান খানকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ইলিয়াস কাঞ্চনের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বক্তব্যের তথ্য প্রমাণ তুলে ধরতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।  

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে শাজাহান খানের বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আল্টিমেটাম দেন।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, নিসচার বিদেশ থেকে অর্থ আনার বিষয়ে শাজাহান খানের সম্প্রতি দেওয়া বক্তব্য পেছন থেকে ছুরিকাঘাতের শামিল।

যদি তার সেই সৎ সাহস থাকে তাহলে সামনে এসে বিদেশ থেকে অর্থ আনার তথ্য প্রমাণ নিয়ে বসুন। প্রয়োজনে লাইভ টকশো হবে সারাদেশের মানুষ দেখবে। আমি তাকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিচ্ছি এ সময়ের মধ্যে আমি কোথা থেকে কত টাকা আনি, আমার ও পরিবারের নামে কত টাকা নেই, তা জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে নয়তো আমি আইনের পথেই হাঁটবো। পাশাপাশি আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজপথে আন্দোলন করা হবে।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুগোপযোগী সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিলেন, তখন কি করে শাজাহান খান সরকারের সেই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন? সেই প্রশ্ন জাতির কাছে রাখছি। আমরা মনে করি সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাগ্রস্ত করতে তিনি ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপাচ্ছেন।  

শাজাহান খানকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পরিবহন সেক্টরে বছরে বিভিন্ন খাতের নামে যে টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। সেই টাকার কত অংশ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে। শ্রমিকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে কয়টা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। কয়টা হাসপাতাল তৈরি করেছেন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে। শ্রমিকদের আবাসনের জন্য কয়টা পল্লি গড়ে তুলেছেন। তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ টাকার কত অংশ ব্যয় হয়। কতজন চালক তৈরি করেছেন বিদ্যমান চালককে দক্ষ করার কি উদ্যোগ নিয়েছেন।  

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক চাই এর পক্ষ থেকে আমরা নতুন চালক তৈরি করার জন্য বেকার এসএসসি পাস অনেককে লাইসেন্স পাইয়ে কর্ম উদ্যোগের মাধ্যমে দারিদ্র্যতা দূর করতে অংশগ্রহণ করেছি। পাশাপাশি চালকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজারের মতো চালককে প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছি। এ প্রয়াস এখনও চলমান।  

শাজাহান খানকে উদ্দেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, এ শাজাহান খানরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য শ্রমিকদের শুধুই ব্যবহার করে আসছেন। শ্রমিকদের জুজুর ভয় দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এ শ্রমিকরাই একদিন সব বুঝতে পারবে তখন তারাই প্রতিবাদের দেয়াল হয়ে দাঁড়াবে সেই সময় আর বেশি দূরে নয়।  

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শাজাহান খানরা বলে থাকেন, আমি নাকি সাধারণ মানুষের কাছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কথা বলি। আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছি কবে, কখন, কোথায়, আমি পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, সেটা প্রমাণ দিতে হবে। আমি কথা বলি অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অনিয়মের বিরুদ্ধে, বিশৃঙ্খল পরিবেশের বিরুদ্ধে। আর সেটা যদি কারো বিপক্ষে যায় তাহলে কি খুব বেশি অন্যায় হবে। আমি এবং আমার সংগঠন কখনোই চালক, মালিকদের প্রতিপক্ষ ভাবি না কিন্তু শাজাহান খান বারবার চালক-মালিক এবং শ্রমিকদের আমার এবং আমার সংগঠন ও পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছেন। যার ফলে আমি এবং আমার সংগঠনের সদস্যরা শংকিত। সরকারের কাছে অনুরোধ আমার এবং নিচসা সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।  

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের টাকা কোথায় থেকে আসে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে আমরা নিয়মিত মাসিক চাঁদা গ্রহণ করি। আমাদের সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন শাখায় মাটির ব্যাংকে দৈনিক পাঁচ টাকা করে জমা করেন। এছাড়াও আমাদের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী এবং স্পন্সর রয়েছে তাদের টাকায় আমাদের সংগঠন চলে। নিসচা প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১২ বছর আমি সম্পূর্ণ আমার নিজের টাকা থেকে সংগঠন চালিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
আরকেআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।