তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনে যাত্রী আসা-যাওয়া কমেছে। তবে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পর্যটনের প্রসারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ট্রাভেল ম্যাগাজিন ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ও পর্যটনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক উপস্থিত ছিলেন।
মো. মাহবুব আলী বলেন, প্রথমত চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের কোনো সরাসরি ফ্লাইট নেই। আমাদের দেশের ইউএস-বাংলা যারা প্রাইভেট এয়ারলাইন্স, তাদের একটি ফ্লাইট রয়েছে তাও গুয়াংজু। গুয়াংজুতে করোনাভাইরাস নেই। তারপরেও প্রতিনিয়ত মানুষের আসা-যাওয়া রয়েছে, প্রকৃতপক্ষে কোনো কিছুই থেমে নেই।
‘বাংলাদেশের যেসব নাগরিক চীনে আতঙ্কিত ছিল তাদের বাংলাদেশে আনা হয়েছে। তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তারা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত নন। আমাদের যে প্লেনটি চীনে গিয়েছিল সেই প্লেনটি জার্মফ্রি হয়েছে। একটি প্লেনকে জার্মফ্রি করার জন্য ছয় ঘণ্টা যথেষ্ট, কিন্তু আমরা ওই প্লেনটিকে ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত জার্মফ্রি করেছি। সেই প্লেনের ক্রু যারা ছিল তারা ১৪ দিন পর্যন্ত বিশ্বের অন্য কোনো দেশে যাচ্ছে না। সুতরাং, যারা বিদেশে আছে তারা নিরাপদ, আমাদের দেশেও এ ধরনের কোনো ভাইরাস আসেনি।
পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরপরেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে করোনা ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হ্যান্ডওয়াশ, ২৪ ঘণ্টা চারজন ডাক্তার, দু’জন নার্স, চারজন ইন্সপেক্টর, ১০ জন করে বাইরোটেশন ৩০ জন ডিউটি দিচ্ছে। প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ করা হয়েছে। প্লেনের যাত্রীরা থার্মাল আইসোলেশনের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করছে।
‘একটি বিশেষ ডিটেকটিভ মেশিন বাংলাদেশে আনা হয়েছে, যা একজন যাত্রীর কপালে ধরলেই তার শরীরের তাপমাত্রা বলে দিচ্ছে। তারপরেও যাত্রীরা প্রতিদিন আসা-যাওয়া করছে এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে করোনা ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ’
বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো মেসেজ দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় এখন সেটা প্রয়োজন নেই। বিদেশিরা জানে কোথায় করোনা আছে। তবে প্রয়োজন হলে অবশ্যই জানাবো। সতর্ক ব্যবস্থা শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীই করছে। আমরা ভালোভাবেই ব্যবস্থা নিয়েছি। ফলে গ্যাপে কেউ চলে আসবে এটার কোনো সুযোগ নেই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে যে সব যাত্রী আসছে তাদের আমরা বোর্ডিং দিচ্ছি না। তাদের বাইরে আপলোড করা হচ্ছে। ভিন্নপথে স্ক্যানিংয়ের মধ্যদিয়ে আনা হচ্ছে। পরীক্ষা হচ্ছে না এটা একেবারেই ঠিক না। প্রতিটি দেশের যাত্রীদের স্ক্যানিংয়ের মধ্য দিয়ে আসতে হয়। মূল বিষয় হলো তারা বুঝতে পারছে না যে তাদের স্ক্যানিং হচ্ছে।
যাত্রীর সংখ্যা কমেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব মহিবুল হক বলেন, আমাদের দেশে অনেকগুলি উন্নয়ন প্রকল্পে চায়নিজ কাজ করে। চায়না এখন তাদের লোক বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না। যাতে এই ভাইরাস পৃথিবীর অন্য কোথাও না ছড়ায়।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে চার এয়ারলাইন্স কাজ করে। সত্যিকার অর্থে আসার যাত্রী ওইভাবে না কমলেও যাওয়ার যাত্রী কমে গেছে। আমরা মনে করি সারা পৃথিবীর সবাই জানে কোথায় করোনা আছে। ফলে বিদেশি পর্যকটরা এখনও বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশ হিসেবে ভাবছে। সাময়িক যে প্রভাব পড়েছে সেটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। ফলে মুজিববর্ষে বড় কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
জিসিজি/এএ