মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেষ সাক্ষী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবিরের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে বরগুনা জেলা কারাগারে থাকা এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আট আসামিকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে থাকা নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকেও আদালতে হাজির করা হয়েছেন।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিন্নির জামিন বাতিল আবেদনের বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেনের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে মঙ্গলবার।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শেষ স্বাক্ষী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরকে আসামিপক্ষের ১০ জন আইনজীবী জেরা শুরু করেছেন। এছাড়াও মামলার সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করবেন আদালত। এ লক্ষ্যে প্রজেক্টরে সব ভিডিও ফুটেজ যাচাই করা হবে।
১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর আট জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২৪ কার্যদিবসে এ মামলার ৭৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করার পাশাপাশি শেষ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রয়েছে। এছাড়া গোলাম সরোয়ার নামে একজন সাক্ষী প্রবাসী হওয়ায় তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেনি আদালত। তাছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক আসামী মুছা এখনো পলাতক রয়েছে।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে (২৫) গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। আশপাশের অনেক লোক সন্ত্রাসীদের এ তাণ্ডব দেখলেও একজন ছাড়া তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেনি কেউ। গুরুতর আহত রিফাত ওইদিনই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক, আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ, মো. নাজমুল হাসান ও রাতুল শিকদার জয় জামিনে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
ওএইচ/