ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ত্রীকে ভাগিয়ে সংসার করছেন এএসআই, বিচার পাননি ভুক্তভোগী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
স্ত্রীকে ভাগিয়ে সংসার করছেন এএসআই, বিচার পাননি ভুক্তভোগী

লালমনিরহাট: ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাদের হোসেনের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সাত মাসেও বিচার পাননি ভুক্তভোগী। উল্টো পুলিশ কর্মকর্তার হুমকিতে প্রাণ শঙ্কায় রয়েছেন বলে অভিযোগ তার।

সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাদের হোসেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি গাইবান্ধার ফুলছরি উপজেলার বাসিন্দা।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানায় কর্মরত অবস্থায় ওই এলাকার ব্যবসায়ী নাবিদ হাসান হিমেলের স্ত্রী এক সন্তানের জননী ফারহানা আক্তার উর্মিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত বছরের ২০ জুলাই ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন পুলিশ কর্মকর্তা নাদের হোসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বদলি নিয়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানায় যোগদান করেন নাদের হোসেন। স্ত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করায় ব্যবসায়ী নাবিদ হাসান হিমেল গত ২ আগস্ট বিয়ের প্রমাণাদিসহ  লালমনিরহাট পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।  

একই সময় অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করায়  পুলিশ কর্মকর্তা নাদের হোসেনের প্রথম স্ত্রী শিল্পী বেগম লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যেখানে স্ত্রী সন্তানের ভরণপোষণ না দেওয়া এবং অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থী হন তিনি।

অভিযোগ দুইটি আমলে নিয়ে ২১ আগস্ট তৎকালিন পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) সোহরাওয়াদীকে নির্দেশ দেন। যার স্মারক নং - ২১৭৮।

ঘটনাটির জোরালো তদন্ত হলেও দীর্ঘ সাত মাসেও  কোনো বিচার বা প্রতিকার পাননি দুই অভিযোগের ভুক্তভোগীরা। ফলে এএসআই নাদের হোসেনের প্রথম স্ত্রী শিল্পী বেগম সন্তানকে নিয়ে নিদারুন অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।  

অপরদিকে স্ত্রী না থাকায় সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী নাবিদ হাসান হিমেল। অভিযোগ করায় ব্যবসায়ীকে হুমকি দিচ্ছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।  

একটি দায়িত্বশীল সূত্রের দাবি, পুলিশ সুপার পরিবর্তন হওয়ায় টাকার জোরে ওই অভিযোগ বা তদন্ত রিপোর্টটি ফাইলবন্দি করে রেখেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা।

ব্যবসায়ী নাবিদ হাসান হিমেল বলেন, স্ত্রী ছাড়া সন্তানকে লালন পালন করা এবং ব্যবসা পরিচালনা করা বড়ই কষ্টের। সেই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ায় এএসআই নাদেরের অব্যাহত হুমকিতে জীবন শঙ্কায় পড়েছি। এ অবস্থায় আমি ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।  

এএসআই নাদের হোসেনের প্রথম স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, অনুমতি না নিয়ে ফারহানা আক্তার উর্মি নামে এক নারীকে বিয়ে করেছেন নাদের। এরপর থেকে পরিবারের কোনো খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না তার স্বামী।  

অভিযুক্ত হাতীবান্ধা থানার এএসআই নাদের হোসেন বলেন, ফারহানা আক্তার উর্মি নামে কোনো নারীকে বিয়ে করিনি। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। তবে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফারহানা আক্তার উর্মি বলেন, আগের স্বামী ব্যবসায়ী নাবিদ হাসান হিমেলকে তালাক দিয়ে এএসআই নাদের হোসেনকে বিয়ে করেছি।  

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, এখানে আমি কিছুদিন হলো এসেছি। তাই আগের এ অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই। বিচার না পেয়ে থাকলে অভিযোগকারীরা অফিসে আসুক খোঁজ খবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।