এছাড়াও শনিবার (০৪ এপ্রিল) থেকে যথারীতি ওএমএসে আটা ১৮ টাকা কেজি দরে ৯৬টি কেন্দ্রে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয় শনিবার জানায়, ঢাকা মহানগরে মোট ৭৩টি বস্তি আছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসন থেকে জানা যায়, এরা কেউ সরকারে খাদ্য সহয়তা পায়নি। ঢাকা মহানগরে ওএমএস ডিলার কেন্দ্রের সংখ্যা ১২০টি। এই ডিলারদের তালিকা থেকে ২৪ জন ডিলার বাছাই করে সপ্তাহে ৩ দিন পর্যায়ক্রমে ৭৩ বস্তি বা ৩৯ হাজার ১৮০টি পরিবারকে বিশেষ ওএমএস ৫ কেজি চাল বিক্রয় করা হবে। এসব কেন্দ্রে কোনো আটা বিক্রয় করা হবে না।
পরীক্ষামূলকভাবে রোববার (০৫ এপ্রিল) থেকে এই বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম ঢাকা মহানগরের ২টি কেন্দ্র দিয়ে শুরু হবে। কেন্দ্রগুলো হলো- মিরপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ঝিলপাড় বস্তি এবং মহাখালীর সাততলা বস্তি।
এ কার্যক্রম জেলা প্রশাসন, ঢাকা, স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়/খাদ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা রেশনিং ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। এ কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে।
পাশাপাশি শনিবার (০৪ এপ্রিল) থেকে যথারীতি ওএমএস এ আটা ১৮ টাকা কেজি দরে প্রতি কেন্দ্র থেকে ১ হাজার কেজি বিক্রয় করা হবে। কেন্দ্র সংখ্যা হবে ৯৬টি এবং সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে।
নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম সম্পর্কে এসব তথ্য জানায় খাদ্য মন্ত্রণালয়।
করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ওএমএস এর মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে চালের মূল্য প্রতিকেজি ১০ টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়। খাদ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত ওএমএস খাতে চালের এক্স-গুদাম মূল্য ৮ টাকা এবং ভোক্ত পর্যায়ে ১০ টাকায় পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার।
খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্য অধিদপ্তরকে বেশকিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়:
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট কর্মহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি চলমান ওএমএস (আটা) কর্মসূচির অতিরিক্ত হিসেবে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন জনসাধারণ গৃহে অবস্থান করায় সাধারণ শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। দিনমজুর, রিকশা চালক, ভ্যান চালক, পরিবহণ শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, তৃতীয়লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়সহ অন্য সব কর্মহীন মানুষকে এর আওতায় এনে এই বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভোক্তার বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত মাস্টাররোল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরসহ) সংরক্ষণ করতে হবে।
একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে ভোক্তা হিসেবে নির্বাচন করা যাবে না। এছাড়া, উক্ত পরিবারের কেউ যদি খাদ্যবান্ধব অথবা ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগী হয়ে থাকেন তাহলে তিনি এ কর্মসূচির আওতায় ভোক্তা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।
জেলা ও বিভাগীয় শহরের কেন্দ্রে প্রতি ২ মেট্রিক টন এবং ঢাকা মহানগরের কেন্দ্র প্রতি ৩ মেট্রিক টন করে চাল দৈনিক বিক্রি করা যাবে।
জেলা ও বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর ওএমএস বরাদ্দের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ওএমএস কমিটির (জেলা ও বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর ওএমএস কমিটি) মাধ্যমে বিদ্যমান ওএমএস কেন্দ্রের সংখ্যা ঠিক রেখে বিক্রয়কেন্দ্রের স্থান পুনঃনির্ধারণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, শ্রমজীবীদের বসবাস কেন্দ্রের নিকটস্থ বস্তি এলাকায় অথবা পর্যাপ্ত খালি জায়গা আছে এমন স্থানকে অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।
ভোক্তা প্রতি ৫ কেজি চাল বিক্রয় করতে হবে এবং একজন ভোক্তা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদর্শন করে সপ্তাহে একবার মাত্র ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন।
সপ্তাহে ৩ দিন রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চালানো হবে।
স্থানীয় প্রশাসন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সিটি করপোরেশন, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা প্রতিনিধির উপস্থিতি/তদারকিতে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পরিচালনপূর্বক বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ওএমএস নীতিমালায় বর্ণিত জেলা/বিভাগীয়/ঢাকা মহানগরীর কমিটি সার্বিক বিষয়টি মনিটরিং করবে।
ডিলাররা দৈনিক বিক্রয় প্রতিবেদন তদারকি কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষর গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট ওএমএস কমিটির সভাপতির নিকট পাঠাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
এমআইএইচ/এইচএডি/