ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক আসমা আক্তার সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর থেকে গাইনি বিভাগে কর্মরত আছেন। তার স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়।
ডা. আসমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার নির্দেশিত সব নিয়ম কানুন মেনে সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা দিয়ে আসছি। দীর্ঘদিন ধরে সোনাইমুড়ী উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে রফিক মাস্টারের বাড়ির মোহাম্মদ আলীর বাসায় তার ছোট বোনের পরিবারের সঙ্গে থাকি আমি।
১৪ এপ্রিল বিকেলে আমার ছোট বোন আমাকে বলে, আমি যেন আর তাদের বাড়িতে না যাই। ওইদিন সন্ধ্যার সময় আমি বোনের বাড়িতে যাওয়ার পথে বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলী আমাকে অপমানজনক কথা বলেন এবং ওই বাসায় যেতে নিষেধ করেন। বাড়ির মালিকের ধারণা তার বাইরে যাওয়া-আসার কারণে তারা করোনা আক্রান্ত হবেন।
তিনি আরো জানান, যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে কুমিল্লায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে থাকার সুযোগ নেই। তাই বর্তমানে সোনাইমুড়ীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের একটি কক্ষে কোনো রকমে থাকছি।
ওই চিকিৎসকের স্বামী জাহিদুল হাসান কুমিল্লা ডায়বেটিক হাসপাতালের জুনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জানান, বিষয়টি অমানবিক। এ সংকট মূহুর্তে চিকিৎসকরা নিজের জীবন বাজি রেখে আক্রান্ত মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমন সময় একজন বাড়ির মালিকের এমন অমানবিক আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানানো হয়েছে। কিন্তু গত দুই দিনেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সামাদ জানান, সংসদ সদস্য মহোদয় থেকে আমি এইমাত্র জেনেছি। ওনি যদি এ ব্যপারে সহযোগিতা চান, তাহলে সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টিনা পাল জানান, ওই চিকিৎসকের স্বামী বিষয়টি মোবাইলে বিষয়টি জানালে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেন।
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে বারবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ওই নারী যে হাসপাতালের চিকিৎসক আমাকে তা জানানো হয়নি। আমি জানলে এ কথা বলতাম না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
এনটি