সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতের মুম্বেইয়ে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে গিয়ে প্রায় তিন শতাধিক মানুষ আটকা পড়েছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবে ভারতে লকডাউনের কারণে আটকাপড়া বাংলাদেশিদের অনেকেই অর্থ ও খাদ্য সংকটে পড়ে নিরুপায় জীবন-যাপন শুরু করছেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, শর্ত সাপেক্ষে দেশে ফিরতে আগ্রহীদের তালিকা করে মুম্বাই উপ দূতাবাস। সে অনুযায়ী ২৫৯ জনের পৃথক তিনটি তালিকা তৈরি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে হস্তান্তর করেছে।
আগামী ০৩ মে ১৬২ সিট বিশিষ্ট একটি উড়োজাহাজ পাঠানোর শিডিউল করেছে। সে মোতাবেক টিকিট বিক্রি সম্পন্ন করেছে। ফলে প্রায় ১০০ বাংলাদেশি টিকিট কিনতে না পেরে দেশে ফিরতে চরম অনিশ্চিতায় পড়েছেন।
বিমান সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, ০৩ মে ঢাকা-মুম্বাই রুটে এই বোয়িংয়ের পরিবর্তে বিশেষ ড্রিমলাইনার দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করলে কিংবা ডাবল ফ্লাইটের ব্যবস্থা করলে সবাই দেশে ফিরতে পারতেন। তবে আগেই সিদ্ধান্ত হওয়ার কারণে উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া নতুন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ অসম্ভব।
বিমানে টিকিট না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত কয়েকজন মুম্বাইয় থেকে ফোনে বাংলানিউজকে জানান, যতোদিন যাচ্ছে মুম্বাইয়ে করোনা রোগী বৃদ্ধির কারণে লগডাউন আরও বেশি কঠিন হচ্ছে। এখন আশপাশের দোকানপাট-যানবাহন সবকিছুই বন্ধ। ফলে একপ্রকার বন্দি জীবনে আছেন তারা। সেইসঙ্গে আছে অর্থ সংকট। এর মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে।
তবে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মুম্বাই উপ দূতাবাসে যোগাযোগ করে তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। অনেকেই করোনা টেস্টও করেছেন। কিন্তু ঘোষণা দেওয়ার এক দিনের মধ্যেই বিমান বাংলাদেশের টিকিট শেষ। এখন পরিবারের লোকজন টিকিট কিনতে ঢাকায় বিমান অফিসে গেলে বলা হচ্ছে, বিশেষ কোড নম্বর ছাড়া টিকিট বিক্রয় হচ্ছে না, টিকিট শেষ।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, এতোদিন যেসব বাংলাদেশি একসঙ্গে ছিলেন, অনেকেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আটকা পড়া লোকদের আরও বেশি উৎকণ্ঠা বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারি সদিচ্ছার দাবি জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম মোকাব্বির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, 'এতো সংখ্যক যাত্রীর বিষয়ে আগে বোঝা যায়নি। ফলে পুরনো শিডিউল অনুযায়ী টিকিট বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, দূতাবাস লিস্ট পাঠিয়েছে ২৫৯ জনের। অথচ, আমাদের নির্ধারিত ওই বোয়িংয়ের সিট সংখ্যা ১৬২। সেক্ষেত্রে এতো যাত্রী কিভাবে আসবে?
এখন উড়োজাহাজগুলো অলস, সেক্ষেত্রে ড্রিমলাইনার কিংবা অন্য কোনো বড় উড়োজাহাজ দিয়ে বিশেষ ফ্লাইটে সবাইকে দেশে ফেরানো সম্ভব কিনা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা তো আমার একার সিদ্ধান্তের ব্যাপার না। এতো সংখ্যক যাত্রী হবে সেটা জানলে বড় কোন উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা যেতো। তবুও, বিষয়টা মন্ত্রণালয়কে জানাবো।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২০
ইউজি/আরএ