ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নদী পুনঃখননে দুটি সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৭ গ্রামের মানুষ

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২০
নদী পুনঃখননে দুটি সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৭ গ্রামের মানুষ

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাঐতারা গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কাটাখাল নদী পুনঃখনন করতে গিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে দুটি পাকা সড়ক। এতে মূল সড়ক থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার সাত গ্রামের মানুষ। ভাঙা সড়ক দুটির যোগাযোগের জন্য দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

সোমবার (০৮ জুন) বাঐতারা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন’ প্রকল্পের আওতায় কাটাখাল নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে। অবৈধ দখলে ভরাট হয়ে যাওয়া এ নদীর বাঐতারা অংশের উপর দিয়ে দুটি পাকা সড়ক নির্মাণ করে এলজিইডি।

সম্প্রতি কাটাখাল পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় ওই পাকা সড়ক দুটি কেটে ফেলা হয়।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ-কড্ডা আঞ্চলিক সড়কের কাশিয়াহাটা বাজার থেকে একটি ও বাঐতারা এলাকা থেকে আরও একটি পাকা রাস্তা নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এ দুটি পাকা রাস্তা সিরাজগঞ্জ-মুলিবাড়ী মহাসড়কে গিয়ে সংযুক্ত হয়েছে। দুটি সড়কই কাটাখাল নদীর উপর দিয়ে চলে গেলেও নির্মাণ করা হয়নি সেতু। কাটাখাল পুনঃখননের কারণে এর উপর সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়। নদীর পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে ওই সড়ক দুটিও কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে বাঐতারা, কাশিয়াহাটা, চাকলী, মোহনপুর, কাদাই ও ছাতিয়ানতলীসহ সাত/আট গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।  

তাঁত ব্যবসায়ী শামছুল হক, শ্রমিক আলহাজ্ব আলী, ক্যাবল ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল ও বাঐতারা বাজারের মুদি দোকানী জাফর আলীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি এ সড়ক দুটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। এতে এলাকার সাত/আট গ্রামের মানুষকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  

অপরদিকে বাঐতারা ওয়াপদার পাশে বসা ঐতিহ্যবাহী ছাতিয়ানতলী হাটটি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতায়াত করতে পারছেন না। শহর থেকে মালামাল আনতে বিপাকে পড়ছেন মুদি দোকানসহ বাঐতারা বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী।  
সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর মো. চয়েস আলী জানান, আট/দশ দিন আগে কাটাখাল খনন প্রকল্পের ঠিকাদার ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তা দুটি কেটে ফেলেছে। এখানে এখনও সেতু নির্মাণ না করায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। হেঁটে চলাচলের জন্য একটি সড়কে দুটি বাঁশ ফেলে দিয়েছে স্থানীয়রা।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কাটাখাল নদীটির অধিকাংশ এলাকা দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে ছিল। পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় মরে যাওয়া এ নদীটিকে জীবন্ত করতে সব অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। কাশিয়াহাটা ও বাঐতারা এলাকার দুটি রাস্তা কোনো সেতু ছাড়াই এ নদীর উপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। নদীর পানি প্রবাহ সচল রাখতে ওই রাস্তা দুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং জনদুর্ভোগ রোধে অবিলম্বে সেখান দিয়ে সেতু নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে অবগত করা হয়েছে।  

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কাটাখালের উপর আড়াআড়ি ভাবে ১৫টি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। যার অধিকাংশতেই কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। আমরা পুনঃখনন করার পর নদী তার গতিতেই প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে রাস্তা দুটি ভেঙে যেতে পারে। তবে আমাদের কোনো ঠিকাদার রাস্তা দুটি ভেঙে ফেলেননি।  

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. বদরুদ্দোজা বলেন, বাঐতারা এলাকার ওই দুটি সড়কের উপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প তৈরি করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। করোনার কারণে এখনো প্রকল্প দুটির অনুমোদন হয়নি। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।